বিষাক্ত সাপের উপদ্রবের ফলে আতঙ্কে ইবি'র শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২৫ ২১:০৭ পিএম

বিষাক্ত সাপের উপদ্রবের ফলে আতঙ্কে ইবি'র শিক্ষার্থীরা

মিজানুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বেড়েছে সাপের উপদ্রব। বৃষ্টির দিনে হলের বারান্দা, করিডোর ছাড়াও মাঝে মধ্যে এসব সাপ ঢুকে পড়ছে শিক্ষার্থীদের রুমে। এতে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক। আবার বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে এন্টিভেনম থাকলেও ব্যবহারের অনুমোদন নেই। তাই সাপে-কাটা শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া সদরে পাঠানো হয়।

গতকাল (২৪ জুলাই) মধ্যরাতে লালন শাহ হলের পৃথক জায়গা থেকে তিনটি সাপ উদ্ধার করেন শিক্ষার্থীরা। অনেকের মতে এগুলো হলেন বিষধর ‘পদ্ম গোখরা’। এর আগে অন্যান্য হলে সাপ পাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকেই আতঙ্কে রয়েছে হলের শিক্ষার্থীরা।
 
হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গত  কয়েকদিন ধরে হলে গোখরা সাপের উপদ্রব দেখা যাচ্ছে। এর আগে রেসকিউ টিম এসে কয়েকটা সাপ উদ্ধার করে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে আবার হলের প্রতিটি তলায় সাপ দেখা গেছে। লালন শাহ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানায় যে হলে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ টি সাপ মারা হয়েছে। এমন অবস্থায় লালন শাহ হলের প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছে। 
 
এছাড়া গত সপ্তাহের শুরুর দিকে রুমে খাটের নিচে একটি সাপ পাওয়া যায়। এরপর থেকেই সাপের উপদ্রব দেখা যায়। 
 
শিক্ষার্থীরা বলেন, একদিন আমরা ১১ টা সাপ পেয়েছি। আমরা হলের প্রভোস্ট স্যারকে এ বিষয়ে অবগত করেছি। স্যার পরেরদিন কার্বলিক এসিড প্রত্যেক রুমে রুমে পৌছে দিয়েছেন এবং যে ফাকা জায়গায় সাপ পাওয়া গিয়েছিল সেটা পূরণ করে দিয়েছেন।তারপর থেকে তিন-চার দিন আমরা ভালোই ছিলাম। কিন্তু এখন আবার রাতের বেলা তিনটা সাপ পাওয়া গেছে। এটা আমাদের জন্য খুবই আতংকের বিষয়।
 
এবিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান বলেন, ছাত্ররা যেন সাবধানে থাকে, রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমায়, নিজেদের রুম পরিষ্কার রাখে। আমরা হলের প্রতিটি রুমে কার্বলিক এসিড দিয়েছি। এটা রুমে থাকলে সাপ আসবে না। কার্বলিক এসিড দীর্ঘ সময় খোলা থাকলে এর কার্যকারিতা হারিয়ে যায় তাই আমরা কয়েকদিন পরপর প্রতিটা রুমে কার্বলিক এসিড সরবরাহ করবো। তবে কার্বলিক এসিড নির্ধারিত ঘনমাত্রার থেকে বেশি ঘনমাত্রার হলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। তাই আমি সঠিক ঘনমাত্রার কার্বলিক এসিড প্রতিটি রুমে সরবরাহ করেছি। আমাদের সাপ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকতে হবে। যদি কখনও সাপ কামড় দেওয়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে খুব দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করা হবে। আমি হলের সকল শিক্ষার্থীকে সর্বদা সচেতন থাকার জন্য বলছি।
 
এ বিষয়ে ইবি মেডিকেলের উপ-প্রধান মেডিকেল অফিসার  জনান, আমাদের মেডিকেলে এন্টিভেনম আছে। তবে সাপে-কাটা রোগীকে নির্দিষ্ট হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও এন্টিভেনম প্রয়োগ করার নিয়ম নেই। তাই সাপে কাটা রোগী আসলে যতদ্রুত সম্ভব নিকটস্থ সরকারি হাসপাতাল বা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। তবে আমাদের মেডিকেল সেন্টারে প্রথমিক চিকিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা আছে। 
 
তিনি আরও জানান, সতর্কতার  একটি কারণ হলো- এন্টিভেনম সবসময়ই সব রোগীকে দেয়া যায় না। এর বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। অনেক সময় এন্টিভেনমের কারণেই রোগী মারা যেতে পারে। তাই এ ব্যাপারে খুবই সতর্ক থাকতে হয়। এ কারণেই নির্দিষ্ট সরকারি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও এন্টিভেনম দেয়ার নিয়ম নেই।

LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর