শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার দিন ধার্য হবে আজ

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০২৫ ১০:১১ এএম

শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার দিন ধার্য হবে আজ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার ভাগ্যে কি অপেক্ষা করছে, রায়ের সেই দিন নির্ধারণ হবে আজ। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আলোচিত এ মামলার দিনক্ষণ ঠিক করবেন। প্রসিকিউশনের অভিযোগ, বিচার বানচালে দেশে-বিদেশে অপচেষ্টা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ।

জুলাই হত্যাযজ্ঞের মামলায় শেখ হাসিনা ও আছাদুজ্জামান কামালের রায়ের দিন ধার্য হবে ১৩ নভেম্বর। এমন ঘোষণা আসে ২৩ অক্টোবর, কিন্তু কোনো সমীকরণ না মিলিয়ে ১৩ নভেম্বর রায় নিয়ে প্রচারণা চালায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। বিদেশে বসে উত্তেজনা ছড়ায় দলটির নেতাকর্মীরা। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

 

যে ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার রায়ের দিন নির্ধারণ হবে, সেখানে বুধবার নজর ছিল সবার। নিরাপত্তা বাড়ানো হয় পুরো ট্রাইব্যুনালে। প্রসিকিউশন বলছে, বিচার সঠিকভাবে হচ্ছে না বলে জাতিসংঘে যে অভিযোগ দেয়া হয়েছে, একজন পলাতক আসামি হিসেবে তা নিয়ে কথা বলার সুযোগ নেই শেখ হাসিনার।

 

বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ধার্য হবে জানিয়ে প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ সাজা চান তারা।

 

রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনের মুক্তি হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাইব্যুনাল। এদিকে বিচার বানচাল করতে আওয়ামী লীগ দেশে-বিদেশে অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করে প্রসিকিউশনের।

 

মামলার শুনানিতে উঠে এসেছে জুলাই আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে উসকে দিয়ে গৃহযুদ্ধ লাগানোর চেষ্টাও করেছিলেন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা প্রসিকিউশনের মামলার বিচার শুনানি ও সাক্ষ্যপ্রমাণে এমন ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। জুলাই আন্দোলনে শহিদ পরিবারের সদস্য, আহত ব্যক্তি ও চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষ্যে জুলাইয়ের গণহত্যা, নৃশংসতা, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার গুম-খুনসহ নানা ভয়ংকর নির্যাতনের চিত্র উঠে আসে।

 

প্রসিকিউশন জানিয়েছে, ট্রায়ালে যেসব সাক্ষ্য ও প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছে তা পৃথিবীর যেকোনো আদালতে আসামিদের অপরাধ প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট। প্রসিকিউশন শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করছেন।

 

এদিকে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘোষণাকে ঘিরে দেশজুড়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করেছে শেখ হাসিনা ও তার দোসররা। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রায়ের তারিখের নির্ধারণকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাদের অপকর্ম ও নাশকতামূলক তৎপরতা পর্যবেক্ষণে রেখেছে। ইতোমধ্যে রায় প্রদানকে ঘিরে সুপ্রিমকোর্ট, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকা, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও বার ভবনের নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। বুধবার সুপ্রিমকোর্টের পক্ষ থেকে সেনা মোতায়েন চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘিরে সরকারের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডার অংশ হিসাবে দেশজুড়ে নৈরাজ্যের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে এটিকে থ্রেড টু জাস্টিস মনে করি না। বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা এমনটা করছে। তিনি বলেন, আইনানুগভাবে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এখন দেশে যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে, দৃঢ়তার সঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রুখে দেবে। এর আগে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ ট্রাইব্যুনাল বা আদালত ফেস (মুখোমুখি) না করে রাস্তাঘাটে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। যানবাহনে আগুন দিচ্ছে।

এআরএস

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর