জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য নভেম্বরের মধ্যে গণভোট দিতে হবে: জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, অবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং এ বিষয়ে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট দিতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শাহাদত বরণকারী আবু সাঈদ-মুগ্ধসহ সকল শহীদের হত্যার বিচার এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য দেশের সকল শান্তিকামী ও গণতন্ত্রপ্রিয় রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
মাওলানা আব্দুল হালিম ২১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। এর আগে দিনব্যাপী আয়োজিত পৃথক রুকন সম্মেলনেও তিনি বক্তব্য রাখেন। কেন্দ্রীয় আমীর নির্বাচনের লক্ষ্যে এই রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও রংপুর মহানগরী আমীর উপাধ্যক্ষ মাওলানা এটিএম আজম খান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর–দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য, রংপুর–৩ (সদর) আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল; ফোরাম অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (এফডিইবি)-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুস সাত্তার শাহ; জামায়াতের রংপুর জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক; রংপুর মহানগর সেক্রেটারি আনোয়ারুল হক কাজল; সহকারী সেক্রেটারি রায়হান সিরাজী ও আল আমীন হাসান; কোতয়ালী থানা আমীর মাওলানা গোলাম কিবরিয়া; পেশাজীবী সাংগঠনিক থানা-২ এর আমীর অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা; পরশুরাম থানা আমীর এডভোকেট মাহবুব আলম; মাহিগঞ্জ থানা আমীর মোহাম্মদ মোহসিন অলী; হাজীরহাট থানা আমীর বেলাল হোসেন; তাজহাট থানা আমীর এডভোকেট রবিউল ইসলাম; সদর উপজেলা আমীর মাওলানা মাজাহারুল ইসলাম; মহানগর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা শাহজাহান সিরাজ; বাংলাদেশ স্থলবন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রংপুর–দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী অঞ্চল পরিচালক অধ্যাপক আবুল হাশেম বাদল; শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রংপুর মহানগর সভাপতি এডভোকেট কাওছার আলীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, আগামী নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। ইতোমধ্যে উচ্চ কক্ষে পি.আর. পদ্ধতির বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হয়েছে; ইনশাআল্লাহ নিম্ন কক্ষেও ভবিষ্যতে তা হবে। অন্যথায় নতুন করে ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী জালিমদের পুনরুত্থানের সুযোগ দেবে না; গণতন্ত্রমনা সকল দলকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে কোনো টালবাহানা চলবে না। এখনও সময় আছে জুলাই সনদকে সাংবিধানিক ভিত্তি দিয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও খুনি এবং দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে। বিদ্যমান কাঠামো পরিবর্তন না হলে হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তদান ব্যর্থ হবে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের আগে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম, নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির দৃশ্যমান বিচার অবশ্যই করতে হবে।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ তার দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের সহযোগিতায় গত ১৫ বছর ধরে জাতির ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে, দেশের সম্পদ লুট করেছে এবং নিরীহ মানুষ খুন করেছে। তাই ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করারও দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের জুলুম–নির্যাতনের পর আজ এ দেশের মানুষ ইসলামমুখী হয়েছে। দেশের স্বার্থে সবাইকে একসঙ্গে হয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত হতে হবে।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে বিএনপিসহ সকল গণতন্ত্রমনা দল আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতের জন্যই গণভোট প্রয়োজন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: