‘সাবেক ছাত্র নেতাদেরকে সক্রিয় হয়ে দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে হবে’

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:১০ পিএম

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার মাধ্যমে পূর্ণ নির্বাচনি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। জামায়াতের প্রতিটি কর্মীকে এখন নির্বাচনি মাঠে নেমে পূর্ণ শক্তিতে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, দ্বীনকে জাতীয় সংসদে পাঠানোর জন্য এ সময়টিই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। যারা এক সময় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের সবাইকে এখন আবার সক্রিয় হয়ে দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে হবে।

শুক্রবার সকালে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে সদস্য পুনর্মিলনী (১৯৭৭-২০২৫) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

‘সম্প্রীতির টানে শিকড়ের পানে’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মিয়া গোলাম পরওয়ার আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেন। খুলনার ছাত্রশিবির নেতা আমিনুল ইসলাম বিমান, মুন্সী আব্দুল হালিম, আমানুল্লাহ আমান, শেখ রহমত আলী, আবুল কাশেম পাঠান ও সাংবাদিক শেখ বেলাল উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের ত্যাগ ও অবদান আমাদের রাজনীতির ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়। এ সময় মিলনায়তনে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি রাকিব হাসানের পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন—ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।

বিশেষ অতিথি ছিলেন—জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমির মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল।

অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য দেন—মহানগরী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শেখ কামরুল আলম, অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, গোলাম মোস্তফা আল মুজাহিদ, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম, ড. জি এম শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক স ম এনামুল হক, মিয়া মুজাহিদুল ইসলাম, মুকাররম বিল্লাহ আনসারী, আতাউর রহমান বাচ্চু, সাইদুর রহমান, আজিজুল ইসলাম ফারাজী, মিম মিরাজ হোসাইন, হাফেজ ইমরান খালিদ, হাবিবুর রহমান, মুশাররফ আনসারী, আব্দুল আউয়াল, জাহিদুর রহমান নাঈম, তৌহিদুর রহমান, সাবেক সেক্রেটারি খান মোশাররফ হোসেন, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, মু. সিদ্দিকুর রহমান, ওয়াছিয়ার রহমান মন্টু, মাকসুদুর রহমান মিলন, গাজী মোর্শেদ মামুন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জাতীয় নির্বাচন সামনে। জামায়াত ইতোমধ্যে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এখন থেকে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্বাচনের কত আগে আমি ছুটি নিয়ে বাড়ি যেতে পারবো। এটাই মোক্ষম সময় সিদ্ধান্ত নেয়ার। আমিরে জামায়াত বলেছেন, মুসলমানদের সামনে ৫৪ বছরের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনের শক্তিকে পার্লামেন্টে নেয়ার এমন অবারিত সুযোগ অতীতে আর কোনোদিন আসেনি। ভবিষ্যতেও আসবে কিনা আমরা জানি না। ফ্যাসিস্ট আমাদের গর্তে ঢুকাতে চেয়েছিল আল্লাহ তাআলা তাদের গর্তে দিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠন যখন যাকে সে সিদ্ধান্ত নেবে সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার ব্যাপারে আমাদের মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আমরা আমাদের ভাইকে বিজয়ী করা নয় আমরা আমাদের আন্দোলনকে বিজয়ী করার জন্য আমাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর ৯১টি দেশে পিআর চালু আছে, এর ৬-৭টি পদ্ধতি রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য কোন পদ্ধতি উপযোগী-তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হতে পারে

প্রধান বক্তা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের দাঁড়ানোর সুযোগ ছিলো না, সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুতে আল্লাহ তাআলা আমাদের সুযোগ করে দিয়েছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যানেল দিতে পারছে না অনেকেই। যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো বামদের আঁতুড়ঘর, আমাদের সেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলা আমাদের যে এতো কিছু দিয়েছে। আমাদের এটা ধরে রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে যেন অহংবোধ চলে না আসে। অহেতুক কথা বা কাজ করার ব্যাপারে সরাসরি আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছে। ফেসবুকে কথা চালাচালি এসব যারা করে তাদের বিরত থাকতে হবে। যদিও আমরা মনে করি আমাদের কোনো দায়িত্বশীল কেউ করে না, যারা সংগঠনের টাচে নাই তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবেগের বশবর্তী হয়ে করতে পারে। যে আমাকে গালি দেয়, আমরা তাদের কোন প্রত্যুত্তর দেব না। কারণ, গালি কোনো প্রত্যুত্তর হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, সামনে জাতীয় নির্বাচনে যে যে এলাকায় দায়িত্ব পালন করছি। আমাদের জন্য এতো সুযোগ তৈরি হয়েছে, আমরা কোনোদিন কল্পনা করিনি। এত বড়ো শিপমেন্ট আমরা আগে কখনো দেখিনি। আমাদের বিশ্বাস করতে হবে আমরা অন্তত ১৬০টি আসন পাবো। আমাদের আগে ছিলো ১৮টি সর্বোচ্চ ৫০টি। আলহামদুলিল্লাহ শিপমেন্ট আরও অনেক বেশি হয়ে গেছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর