দেশে বিরাজমান সংকট উত্তরণের উপায় দ্রুত নির্বাচন: আমীর খসরু

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:০৯ পিএম

দেশে বিরাজমান সংকট থেকে উত্তরণে দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, নির্বাচন বিলম্ব করলে সংকট বাড়বে।

শনিবার রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। ‘সংস্কার ও নির্বাচন: প্রেক্ষিত জাতীয় ঐক্য’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে ডেমোক্রেসি ডায়াস বাংলাদেশ।

আমীর খসরু বলেন, গত ১৫-১৬ বছর ধরে একটি প্রতিনিধিত্বহীন সরকার দেশ চালিয়েছে, যার কারণেই বাংলাদেশ আজ সংকটের মুখে। শেখ হাসিনার স্বৈরাচার সরকার পতনের ১৪ মাস পরেও কেন সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে? এর কারণ, ১৪ মাস পরেও বাংলাদেশ একটি প্রতিনিধিত্বহীন দেশ হিসেবে পরিচিত।

ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত, যে দেশগুলো দ্রুত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পেরেছে, সেগুলোর অবস্থান ভালো। অন্যদিকে, যারা তর্ক-বিতর্ক ও বিভিন্ন ইস্যু সামনে এনে নির্বাচন বিলম্বিত করেছে, সেসব দেশে গৃহযুদ্ধ, সামাজিক বিভক্তি এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটেছে।

তিনি বলেন, ১৪ মাস পরেও এখনো তর্ক-বিতর্ক চলছে। অথচ আমাদের পাশেই একটি দেশে বিপ্লব বা অভ্যুত্থান হওয়ার পর দায়িত্ব নিয়ে প্রথম কাজ হিসেবে তারা একটি নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে। অভ্যুত্থানকারীরাও যার যার কাজে ফিরে যাচ্ছেন।

‘বাংলাদেশের মানুষের প্রথম প্রত্যাশা হলো, তারা একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার দেখতে চায়। তারা একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার এবং সংসদ দেখতে চায়, যেই সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে ও জবাবদিহি করবে।

সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংস্কার নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশন হয়েছে। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। ঐকমত্য যতটুকু হয়েছে, তা ভালো। কিন্তু ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে আবার কেন এত আলোচনা করতে হচ্ছে? কেন পিআর নিয়ে আলোচনা করতে হবে? আগে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দেশে ফিরিয়ে আনি, যেটার অনুপস্থিতিতে আজকে বাংলাদেশে এই খারাপ অবস্থা হয়েছে।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার পর প্রত্যেকটি দলের অধিকার থাকবে, তারা সংসদের ভেতরে এবং বাইরে তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রতিনিয়ত জনগণের কাছে যেতে পারবে, জনমত সৃষ্টি করতে পারবে। এটাই তো গণতন্ত্র। জনমত সৃষ্টি করে আপনার দাবি প্রতিষ্ঠিত করুন। কিন্তু জনমত সৃষ্টি না করে যদি আপনি ঐকমত্যের কথা বলে অন্যান্য দাবি তুলে আজকে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন, তাহলে তো সেটা কাজ করবে না।’

এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান, বিনা মূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাসহ বিভিন্ন খাতে বিএনপির পরিকল্পনা তুলে ধরে আমীর খসরু বলেন, ‘‘ ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচনের অনুষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে আমরা বিশ্বাস করি, সেই সময় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীলতার দিকে ফিরবে এবং যে সংস্কারগুলোর কথা বলা হচ্ছে, সেই সংস্কারগুলো করব।”

আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মহিউদ্দিন ইকরাম, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, সাংবাদিক সোহরাব হাসান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর