সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে ইসিতে জামায়াতের স্মারকলিপি

সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলাকে একটি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম এ এম রিয়াছাত আলী বিশ্বাসের ছেলে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির নু আ ম মুরতাজা আলী।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায়ের মাধ্যমে উপজেলাবাসীর পক্ষে তিনি এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
লিখিত আবেদনে নু আ ম মুরতাজা আলী জানান, সাতক্ষীরা জেলার দক্ষিণাংশের আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা বাংলাদেশ স্বাধীনের পর হতে ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত ২টি আসন ছিল। একটির সংসদীয় এলাকা (সাতক্ষীরা-৩) আশাশুনি ও অপরটির সংসদীয় এলাকা (সাতক্ষীরা-৫) শ্যামনগর। যা ছিল ভৌগোলিকভাবে দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দুর্যোগপূর্ণ উপকূলীয় এলাকা বিবেচনায় গৃহীত সিদ্ধান্ত।
এরপর বিগত সরকারের আমলে জামায়াত ও বিএনপির বেজ এলাকা বাছাই করে শুধু ভোটার সংখ্যার বিবেচনায় বেশ কিছু সংসদীয় এলাকায় আসন কমিয়ে তাদের সুবিধামতো ঢাকাসহ আরও কিছু জায়গায় আসন বৃদ্ধি করা হয়। তারই অংশ হিসেবে সাতক্ষীরা-৩ ও ৪ আসন গঠন করে ১টি আসন কমানো হয়। কিন্তু এবার আশাশুনি ও শ্যামনগরকে মাত্র ১টি সংসদীয় এলাকা (সাতক্ষীরা-৪ আসন) করায় বিষয়টি সমাধান না করে আরও জটিল হয়েছে। কারণ ভৌগোলিক দিক থেকে আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা অনেক বিস্তৃত ও নদী বহুল অঞ্চল।
আশাশুনি উপজেলা যেমন নদী দিয়ে চার খণ্ডে বিভক্ত, তেমনি শ্যামনগর তিন খণ্ডে বিভক্ত এবং দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা। তাছাড়া আশাশুনির সঙ্গে শ্যামনগরের সরাসরি কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। ২টি উপজেলারই যোগাযোগ ব্যবস্থা অন্যান্য উপজেলার তুলনায় অনেক দুর্গম ও নাজুক।
প্রতি বছর আশাশুনির বেতনা, মরিচ্চাপ, গলঘেষিয়া, কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে কোনো না কোনো এলাকা প্লাবিত হয়। তদ্রূপ শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। দুর্যোগকালীন একজন সংসদের পক্ষে যা তদারকি করা দুরূহ ব্যাপার। এই বিশাল এলাকার প্রায় ১০ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী নিয়ে নির্বাচন করা ১ জন সংসদ সদস্যের পক্ষে কষ্টসাধ্য। যার ফলে উন্নয়ন, নদী ভাঙনসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কার্যকর তদারকি করা সম্ভব নয় এবং এতে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করবে। তাই ভোটার সংখ্যা বিবেচনায় না নিয়ে ভৌগোলিক অবস্থান, দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা ও উপকূলীয় এলাকা হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আশাশুনি উপজেলা ও শ্যামনগর উপজেলাকে পূর্বের মতো দুটি সংসদীয় আসন করাসহ বাকি আসনগুলো পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা জরুরি।
লিখিত আবেদনে বলা হয়, দুই উপজেলার সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনের সচিবালয়ের উল্লেখিত বিজ্ঞপ্তির (৩০/০৭/২০২৫) ঘোর আপত্তি করছি।
কমিশনের নতুন সিদ্ধান্ত বাতিলপূর্বক জনস্বার্থে আগের মতো আশাশুনি উপজেলাকে ১টি সংসদীয় আসন-১০৭ (সাতক্ষীরা-৩) ঘোষণার জোর দাবি জানানো হয়েছে আবেদনটিতে।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপজেলা জামায়াতের আমির আবু মুছা তারিকুজ্জামান তুষার, সহকারী সেক্রেটারি ডা. রোকনুজ্জামান, অফিস সেক্রেটারি মাও. রুহুল কুদ্দুস, প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান, মাও. আব্দুল ওয়াদুদ, শেখ আরিফুল্লাহ সিদ্দিকী, প্রদীপ কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: