অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে তত্ত্বাবধায়ক গঠনের দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
আপডেট: ০৮ আগষ্ট ২০২৫ ১:১৩ এএম

অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে অতিদ্রুত তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ইন্টেরিম ভেঙে দেন এবং আপনি প্রধান হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঘোষণা করেন।’
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সরাসরি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনি কিছু বিপ্লবী সিদ্ধান্ত নিন। যার মধ্যে প্রথমেই ‘৭২-এর সংবিধান বাতিল করে ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে। গঠন করতে হবে স্বাধীন পুলিশ কমিশন, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার করতে হবে।’
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওসমান হাদি বলেন, ‘ঘোষণাপত্র পাঠের সময় ড. ইউনূসের মধ্যে স্বাভাবিক ভঙ্গি ছিল না। মনে হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো তাকে দিয়ে পড়ে নিয়েছে। ২০০ বছরের সংগ্রামের কথা বলা হলেও, শাহবাগে বিচারিক হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর গণহত্যা, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এসব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কোনো স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে নেই।’
তিনি বলেন, ‘৪৭-এর ধারাবাহিকতায় এসেছে ‘৭১ এবং তা চূড়ান্ত রূপ পেয়েছে ২০২৪-এ। অথচ একটার বিপরীতে আরেকটা দাঁড় করিয়ে জাতীয় ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। এটি একটি সুস্পষ্ট বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্র।’
সংবাদ সম্মেলনে হাদি স্পষ্ট করে বলেন, ‘যে ‘৭২-এর সংবিধানের মাধ্যমে বাকশাল কায়েম হয়েছিল, বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল, তা বাতিল করে নতুন সংবিধান রচনা করতে হবে। যেই ক্ষমতায় আসবে, তাকে এ বিষয়ে ওয়াদা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিনিধিত্বশীল পুলিশ কমিশন গঠন করতে হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শহীদ পরিবার, বিরোধী দলসহ সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। একমাত্র বিসিএস প্রশাসনকে সব ক্ষমতা দিয়ে রাখলে সেটা আমলাতন্ত্রে পরিণত হবে। প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে এবং অন্যান্য ক্যাডারকেও ক্ষমতায়ন করতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টার দিকে প্রশ্ন তুলে ওসমান বিন হাদী বলেন, ‘পিলখানার কথা বললে আর্মি ক্ষেপে যাবে, এ কারণে কি আপনি (অন্তর্বর্তী সরকার) পিলখানার কথা বললেন না? শাপলা গণহত্যাকে অনেকে এখনো রাজনৈতিক অভ্যুত্থান বলে। শাপলাকে বাদ দিয়ে আপনি কোনো ফ্যাসিবাদ আবার আনতে চান? নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে আমাদের বাচ্চারা রক্তাক্ত হয়েছে, কিন্তু তারও স্বীকৃতি ঘোষণাপত্রে নেই। ঘোষণাপত্রে ’৪৭-এর স্বীকৃতি, ’৭৫-এর স্বাধীনতার পর ১৯৯০-এর অভ্যুত্থানের সঙ্গে পিলখানা, শাপলা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে আপনাকে একনোলেজ (স্বীকৃতি) করতেই হবে।’
শরিফ ওসমান হাদি ঘোষণাপত্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক উল্লেখ করে বলেন, ‘হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু বলতে হবে, হাসিনার পতন ঘটিয়েছে এবং সে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এখানে অনেক গুম ও খুনের কথা আছে। কিন্তু বিচারিক হত্যাকাণ্ডের কথা নাই। জামায়াতের যেই নেতাদের ফাঁসি হয়েছে, তারা অ্যাডভান্টেজ পাবে। এই ভয়ে কি আপনারা সে কথাও বলেন নাই? এ ছাড়া জুলাই সনদে ১৯টি সংস্কারের কথা বলা হলেও ১০টি সংস্কারে বিএনপি ১০টি সংস্কারে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ হিসেবে নিয়েছে। অর্থাৎ আপাত দৃষ্টিতে আমি এটা মেনে নিয়েছি, কিন্তু আমি একমত না।’
LIMON
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: