জুলাই ঘোষণাপত্র ‘পরিপূর্ণ’ নয়: এনসিপি

অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই ঘোষণাপত্রকে ‘সাধুবাদ’ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে ঘোষণাপত্র ‘পরিপূর্ণ’ নয় বলেও জানিয়েছে দলটি।
বুধবার (০৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন। অন্তর্বর্তী সরকারের জুলাই ঘোষণাপত্রকে ‘সাধুবাদ’ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে ঘোষণাপত্র ‘পরিপূর্ণ’ নয় বলেও জানিয়েছে দলটি।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
আখতার হোসেন বলেন, বহুল আকাঙ্ক্ষিত জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছে। আমরা সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কিছু বিষয় তা যদি ঘোষণাপত্রের মধ্যে উল্লেখ থাকত তাহলে এই ঘোষণাপত্র আরও পরিপূর্ণ হতো বলে আমাদের মনে হয়।
তিনি বলেন, ঘোষণাপত্রে উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ৪৭-এর কথা এখানে উল্লেখ করা হয়নি। ঘোষণাপত্রে শহীদের সংখ্যার ব্যাপারে প্রায় ‘১ হাজার’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১ হাজার ৪০০ মানুষ শহীদ হয়েছেন। এই পরিসংখ্যান আমাদের সবার জানা। গত এক বছরে সরকার শহীদদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর, কোটা সংস্কার, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, আবরার হত্যাকাণ্ড ও মোদিবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ অনুপস্থিত থাকার কারণে ঘোষণাপত্রটি পরিপূর্ণতা পায়নি।
আখতার বলেন, সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এই ঘোষণাপত্রের ২৫ ও ২৭ নম্বর পয়েন্টে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানে তফসিলে এই ঘোষণাপত্রকে উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে। আমরা এনসিপি দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে একটি নতুন সংবিধানের দাবি জানিয়ে আসছি। সে লক্ষ্যে গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সংবিধান পুনর্লিখনের দাবি আমরা সরকারের কাছে করে এসেছি।
তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়বস্তুতে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেখানে বাস্তবায়নের পথ কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। যখন এই ঘোষণাপত্রকে পরবর্তী সংস্কারকৃত সংবিধানের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন আমাদের যে নতুন সংবিধানের দাবি, তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সবার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সংগ্রাম জারি রাখতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন। আমাদের তাতে আপত্তির কোনো জায়গা নেই। কিন্তু নির্বাচন আয়োজনের পূর্বে সরকারের অবশ্য পালনীয় কিছু কর্তব্যের জায়গা রয়েছে। গণহত্যাকারীদের বিচার ও রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত পরিবর্তনের জন্য সংস্কার নিয়ে এই সরকার যাত্রা শুরু হয়েছে। তাই নির্বাচনের আগে সংস্কারকে দৃশ্যমান করা ও সংস্কার বাস্তবায়ন করা এ সরকারের অবশ্য কর্তব্য।
একইসঙ্গে নির্বাচনের আগেই মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেন আখতার। তিনি সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতি চান যে, নির্বাচনের আগেই সংস্কার ও বিচার দৃশ্যমান করা হবে, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা হবে, নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: