ফ্যাসিবাদী চরিত্র ফিরিয়ে আনতে কয়েকটি দল প্রতিযোগিতায় লিপ্ত: মঞ্জু

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ০১ আগষ্ট ২০২৫ ২৩:০৮ পিএম

ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দ্রুত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিজেদের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে কয়েকটি রাজনৈতিক দল প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।

তিনি বলেন, রক্তের স্রোতের ওপর দিয়ে যে মুক্তি আমরা অর্জন করেছি সেই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবাদী রাজনীতি আর ফিরবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দ্রুত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী চরিত্র নিজেদের মধ্যে ফিরিয়ে আনার ‍প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল।

শুক্রবার (১ আগস্ট) এবি পার্টির যুব সংগঠন এবি যুব পার্টির তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। যুব পার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুলের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব হাদিউজ্জামান খোকন সভার সঞ্চালনা করেন।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে যারা ক্ষমতাবান হচ্ছে তারাই স্বৈরাচারী হয়ে যাচ্ছে এবং অল্প সময়ের মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কমে যাচ্ছে, এটা গণতন্ত্র ও দেশের স্থিতিশীলতার জন্য খুবই অশনি সংকেত।

তিনি বলেন, আগে আমরা ভয় ও নির্যাতনের মধ্যে ছিলাম, কিন্তু এখন আমরা এক নতুন বাংলাদেশের দ্বারপ্রান্তে। এই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকসহ বহু সাধারণ মানুষ জীবন দিয়েছে কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার সন্তান নিহত হয়নি। আবু সাঈদের মৃত্যু জাতিকে জাগিয়ে তোলে– এটি বিবেকের বিপ্লব ছিল। ইতিহাস বলে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পতিত ফ্যাসিবাদীরা আর ফিরে আসতে পারে না কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে অনেকে আওয়ামী চরিত্র ধারণ করছে, মজলুম থেকে হয়ে উঠছে জালিম।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, হাসিনার দুঃশাসন আমাদের শিক্ষা দেয়নি। আজ ধর্মভিত্তিক দলগুলো যেভাবে অহংকার করছে, তা জনগণ পছন্দ করছে না। ক্ষমতার চক্রটি এক ধরনের ‘চাঁদাবাজি পদ্ধতি’ তৈরি করেছে। এ ব্যবস্থাকে ভাঙতেই আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলেছি। বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার চূড়ায় থাকা ব্যক্তিরাও ইতিহাসে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন, শেখ মুজিবুর রহমান তার বড় উদাহরণ।

যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ বলেন, জুলাই পক্ষের শক্তিগুলো বিভক্ত হয়ে গেলে পতিত স্বৈরাচার ফের মাথাচাড়া দেবে। এই গণঅভ্যুত্থানে রক্ত দিয়েছে সবাই। এক বছর পার হলেও এখনও কোনো রায় হয়নি– এটা জাতির প্রতি অবমাননা। হাসিনার প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ।

বাংলাদেশ যুব শক্তির আহ্বায়ক ডা. জাহেদুল ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছরে জনগণের অনেক প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যদি জুলাই ঘোষণা বাস্তবায়ন না হয়, জাতি আমাদের ক্ষমা করবে না। এই ঘোষণার বাস্তবায়ন ও হাসিনার বিচার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। তরুণদের অংশীদারত্ব নিশ্চিত করেই তারুণ্যের বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

যুব জাগপার সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদের সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের জন্যই আমরা যুব সংগঠনগুলো এক হতে পারিনি। ভবিষ্যতে আমরা ঐক্যবদ্ধ যুব সমাজ গড়ে তুলতে চাই।

সভাপতির বক্তব্যে শাহাদাতুল্লাহ টুটুল বলেন, জুলাই বিপ্লবের আগে ও পরে বাংলাদেশ এক নয়। আমরা বিশ্বাস করি, যুবাদের ঐক্যের মধ্য দিয়েই নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম খালিদ হাসান, শহীদ ফারদিনের পিতা নুর উদ্দিন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের সভাপতি জাহেদুজ্জামান জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আদনান আহমেদ, বিপ্লবী যুব সংহতির সদস্য সচিব মীর রেজাউল হক, বাংলাদেশ যুব সংহতির আহ্বায়ক হারুন-অর রশিদ, ইসলামী যুব সমাজের আহ্বায়ক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ খান।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর