আমাদের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা: জামায়াত

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ২২ জুলাই ২০২৫ ২২:০৭ পিএম
আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৫ ১১:২০ পিএম

দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে না পারলে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব হবে বলে বিএনপির মতামতের বিষয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আমরা মনে করি, বাংলাদেশে এখন সংস্কার এবং চেঞ্জ হচ্ছে। সেভাবে দলগুলো যেন ডেমোক্রেটিক হয়, সেই চেষ্টাও আমাদের করতে হবে।

কারণ ডেমোক্রেসির ভায়োলেশন হয় তখনই, যখন নিজ দলেই ডেমোক্রেসি থাকে না। আমাদের মূল উদ্দেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকরণ করা। রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হলে সেটি দলীয়ভাবেও হতে পারে।’

মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের ১৭তম দিনের সংলাপ শেষে এসব কথা বলেন তাহের।

তিনি বলেন, বিএনপি বলেছে, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা, দলীয় প্রধান পারবে। আবার এনসিপিসহ কোন কোন দল বলেছে, তিনটাতে তিনজন আলাদা ব্যক্তি থাকতে হবে। আমরা বলছি,' প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ একজন হতে পারবে এবং একজন হওয়া উচিত। কারণ সংসদ নেতা আর প্রধানমন্ত্রী যদি এক ব্যক্তি না হয়। তাহলে সংসদের ভিতরে সামঞ্জস্যতা হবে না, পার্থ্যক্য হবে। যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি একই সময়ে দলীয় প্রধান হতে পারবেন না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে সার্চ কমিটি বা বাছাই কমিটির বিষয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, এক্ষেত্রে পাঁচজনকে নিয়ে আমাদের প্রস্তাব ছিল। বিএনপি প্রথমে চারজনের কথা বলেছিল, আমরা বলেছি পাঁচজন হবে। পরে বিএনপিসহ অধিকাংশ দলেই পাঁচজনের ব্যাপারে একমত হয়েছে অনেকটা। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কালকে জানা যাবে।

এই কমিটি প্রধান উপদেষ্টার নাম নির্বাচন করবে সরকার, বিরোধী দল এবং তৃতীয় পক্ষের দেওয়া নামের সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে। তবে যদি ঐকমত্য না হয়, তাহলে কোন পক্ষ যেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বা ভোটিংয়ের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি। হর্স ট্রেডিং বা তৃতীয় পক্ষকে সিদ্ধান্তদাতা করে তোলা যেন না হয়—এ বিষয়েও গুরুত্ব দেন জামায়াতের এই নেতা।

তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রক্রিয়া চাই না, যেখানে রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে বিশ্বাসহীনতা তৈরি হয়। বরং সবাই মিলে আলোচনার ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে হবে। বিএনপি ও জামায়াতের প্রস্তাব অনেকটাই কাছাকাছি বলে মন্তব্য করেন তাহের। বিশেষ করে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন এবং অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলোর কাছ থেকে নাম প্রস্তাব চাওয়ার বিষয়ে মতামত মিলে গেছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন নামের সংখ্যা ও নির্বাচনের কৌশলে মতপার্থক্য রয়েছে।

তিনি জানান, আলোচনার কিছু বিষয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ কারণে জামায়াতে ইসলামী কমিশনের কাছে আরও একদিন সময় চেয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা চাই, এমন একটা পথ বের হয় যা সর্বোত্তম এবং জাতির জন্য মঙ্গলজনক হয়।”

বক্তব্যের শুরুতে তাহের মাইলস্টোন স্কুলের যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে পরিবারের প্রতি সমাবেদনা জ্ঞাপন করেন। আহতদের সুচিকিৎসা দাবি করেন। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, শোকাতর ভয়াবহ শোকবহ পরিস্থিতিকে পুঁজি করে সকালে মাইলস্টোনের এখানে একটু বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। আবার সচিবালয়ের এখানেও বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। যারা আহত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের দাবি থাকবে। এটা খুবই স্বাভাবিক। পুরা নেশন এখন তাদের প্রতি আছে। বিশৃংখলার পিছনে শোনা যায় আওয়ামী লীগেরও কিছু কিছু দুষ্ট চক্র এই পরিস্থিতিটাকে গোলাটে করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা কনফার্ম না।

তাহের বলেন, স্পষ্ট বলতে চাই, বিতাড়িত,পরাজিত এবং দেশত্যাগে বাধ্য অপশক্তি বাংলাদেশের পুনরায় রাজনীতিতে পুনর্বাসন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন অধিকার নেই । এ ধরনের বিশৃঙ্খলা যদি শুরু করতে থাকে , তাহলে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই আগস্টের চেতনা নিয়ে আবারো তাদেরকে (আওয়ামী লীগ) তা করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করব- ইনশাআল্লাহ।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর