আগে সংস্কার ও বিচার পরে নির্বাচন: চরমোনাই পীর

ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি। জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে হাজার হাজার মায়ের বুক খালি হয়েছে। কেউ আহত হয়েছেন, কেউ অন্ধ কিংবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। আমরা সবসময় বলে এসেছি—আগে সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত করে তারপর নির্বাচন দিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের অপরাজেয় ৭১ মাঠে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা শাখা আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অসহযোগিতা এবং দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। একটি দল সংস্কারের কথা শুনতে রাজি নয়। তারা শুধু নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। তারা বিদেশি সুরে কথা বলছে। জনগণ বুঝে গেছে—তারা ক্ষমতায় গেলে কী করবে। খুনিরা, দুর্নীতিবাজেরা, টাকা পাচারকারীরা যেন আর ক্ষমতায় না আসে—এটাই জনগণের প্রত্যাশা।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে বলেন, হাসিনাকে খাবার না খেয়ে হেলিকপ্টারে দেশত্যাগ করতে হয়েছিল। রান্না করা খাবারও খেতে পারেননি। ৩ ঘণ্টা আগেও তিনি ভাবেননি পালাতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানে যারা মায়ের কোল খালি করেছে, তাদের বিচারের কথা আজ যারা নির্বাচনের জন্য তৎপর, তারা বলেন না। অথচ জাতি জানতে চায়—কেন সেই হত্যাকারীদের বিষয়ে তাদের কোনো বক্তব্য নেই?
প্রধান উপদেষ্টাকে ঘিরে ষড়যন্ত্র নিয়ে চরমোনাই পীর বলেন, আমরা বর্তমান সরকারকে সংস্কারমূলক কাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে দায়িত্বে রেখেছি। অথচ কয়েক মাস না যেতেই একশ্রেণির লোক তীব্র ভাষায় কথা বলছে। খুন, গুমসহ নানা অপরাধীদের বিচারে প্রধান উপদেষ্টার সময় প্রয়োজন। অথচ তাদেরকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের সুরে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বারবার নির্বাচন নির্বাচন করে সরকারকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটি শুভ লক্ষণ নয়। ৫৩ বছরে এই দেশ কী পেয়েছে? দুর্নীতিতে বিশ্বে শীর্ষে পৌঁছেছে। চুরি, গুম, হত্যা—সবই হয়েছে শাসকগোষ্ঠীর নেতৃত্বে।
চরমোনাই পীর ঘোষণা দিয়ে বলেন, সুন্দর ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ। ভোটারদের প্রতি আহ্বান—দলীয় প্রতীকে ভোট দিন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামি যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান, ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার আমীর মাওলানা মুহাম্মদ হাফিজ উদ্দীনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: