আন্দোলনে অচল নগর ভবন, নাগরিক সেবা বন্ধ
আপডেট: ২২ মে ২০২৫ ১০:৪৭ এএম

ইশরাককে মেয়র হিসেবে পেতে এক সপ্তাহের বেশি সময় আন্দোলন করে আসছেন তার সমর্থকরা।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তার সমর্থকদের আন্দোলনে এক সপ্তাহ ধরে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবন। বন্ধ রয়েছে সব ধরনের নাগরিক সেবা। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (২২ মে) ইশরাককে শপথ না পড়ানোর রিট আবেদনের আদেশ ঘোষণা করবেন হাইকোর্ট। তবে রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করার কথা গতকালই জানান ইশরাক সমর্থকরা। বুধবার সকাল ১০টা থেকে ঢাকার মৎস্য ভবন ও কাকরাইল মোড়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার প্রবেশমুখের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা। রাত পৌনে ১২টা পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে সড়কে ছিলেন ইশরাক হোসেন।
নাগরিক সেবা ব্যহত হওয়ার বিষয়ে ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, “নগর ভবন তালাবদ্ধ করে রাখার কারণে সিটি করপোরেশনের কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড চালানো সম্ভব হচ্ছে না। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশ সনদ, জমি হস্তান্তরসহ সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।”
শুধু নগর ভবনের সেবা নয়, নগর ভবনের বাইরের আটটি আঞ্চলিক অফিসও বন্ধ রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “মশক নিধনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যামিকেলগুলো নগর ভবনের স্টোরে আটকা পড়ে আছে, যার ফলে গত কয়েকদিন ধরে মশক নিধন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। একই কারণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গাড়িগুলো জ্বালানির অনুমোদন না পাওয়ায় সেগুলোর কার্যক্রমও থেমে গেছে। শহরের বিভিন্ন এসটিএস পয়েন্টে বর্জ্য জমে আছে, কিন্তু তা ল্যান্ডফিলে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।”
আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মচারীরা জানান, ডিএসসিসির প্রতিটি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আন্দোলনে উপস্থিত থেকে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
যে চারটি সংগঠন নাগরিক সেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে, সেগুলো হলো—স্ক্যাভেঞ্জার অ্যান্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, পরিবহন চালক ও শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন, বিদ্যুৎ কর্মচারী সমাজ কল্যাণ সমিতি এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমাজ কল্যাণ সমিতি।
এ বিষয়ে প্রশাসক শাহজাহান মিয়া বলেন, “আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, আমরা সেটিই অনুসরণ করব।”
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সবশেষ নির্বাচন হয়। তাতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাককে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। তবে তার শপথ অনুষ্ঠান এখনও হয়নি। এ কারণে সমর্থকরা অবস্থান কর্মূসচি পালন করে আসছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: