ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের জন্য মরণফাঁদ: মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ফারাক্কা বাঁধ এখন বাংলাদেশের জন্য মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের জীবন মরণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে মাওলানা ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি), নিউইয়র্ক-যুক্তরাষ্ট্র-এর সহায়তা ও আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) বাংলাদেশ-এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় ফারাক্কা বাঁধের ক্ষতিকর দিকগুলো উপস্থাপন করে ড. মঈন খান বলেন, ফারাক্কা বাঁধ তিনটি জিনিস করেছে। মরুকরণ, পলি জমা, লবণাক্ততা। ইউনেস্কোতে তালিকাভুক্ত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে অন্তর্ভুক্ত সুন্দরবনকে ধ্বংস করেছে এই ফারাক্কা বাঁধ। এতে দেশের উত্তরাঞ্চল দিন দিন মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আমাদের দেশের পরিবেশের বিপর্যয় হয়েছে এই বাঁধটির কারণে৷ পলি জমার কারণে আমাদের নদীর স্বাভাবিক নাব্যতা বন্ধ হয়েছে। তার ফলশ্রুতিতে মানুষের যে জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে। সর্বশেষ লবণাক্ততার কারণে বঙ্গোপসাগরের পানি উপরের দিকে উঠে আসছে। তাতে করে সেখানের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই তিনটি বিষয়ের কারণে বাংলাদেশের মানুষ ফারাক্কা বাঁধের নাম দিয়েছে মরণফাঁদ।
প্রস্তাবনার মধ্যে বাংলাদেশের সাথে ভারতের ৫৪টি যৌথ নদীর পানি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, সকল নদীর উজানে বাধ নির্মাণ করে পানি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ যে মারাত্মক পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে সেটার সঠিক বিচার পেতে সরকারের মাধ্যমে জাতিসংঘে নিয়ে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গণমাবেশে বক্তারা বলেন, সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারত আমাদের পানি দিয়ে ভয় দেখাইতে চায়? বাংলাদেশের মানুষ ভারতে ভয় পায়না। আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। পানি না দিয়ে উত্তরাঞ্চল মরুভূমি বানিয়ে দিয়েছে। দেশ বাঁচাতে হলে নদী রক্ষা করতে হবে। নতুন করে একটি মহা পরিকল্পনা দিতে হবে। পানি নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ভারত নাটক করছে। যেহেতু তারা এতদিন চুক্তি মানেনি। সুতরাং নতুন করে তাদের সাথে চুক্তি করার কোনো মানে হয়নি। আমরা ভারতকে বিচারের মুখোমুখি করতে পারিনি। নদীগুলোকে মারার মাধ্যমে এদেশের মানুষকে মারার পরিকল্পনা করছে ভারত। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার দাবি জানান তারা।
এসময় মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর দৌহিত্র আজাদ খান ভাসানী বলেন, ফারাক্কার বাঁধের মধ্যে সার্বভৌমত্ব লুকিয়ে রয়েচে। ফারাক্কা বাঁধ ইস্যুতে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো ভাসানী বাংলার মানুষকে একত্রিত করতে পেরেছিলেন। বর্তমান '২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পরে বাংলার মানুষ তাদের অধিকার ফিরিয়ে আনবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।
আইএফসি বাংলাদেশ-এর সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্ব সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আইএফসি নিউইয়র্ক চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক কমরেড টিপু বিশ্বাস, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বিএসডি) নেতা খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক আসাদ বিন রণি, বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজে সভাপতি শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: