"আসন ভাগাভাগির জেরে ভেংগে যাচ্ছে এনসিপি"

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৩ মে ২০২৫ ১২:০৫ পিএম
আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ১২:২০ পিএম

ফাইল ফটো

"একটি বিশেষ দল কে খুশি করে আসন ভাগাভাগি করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে রাজাকার ক্যাচাল তৈরী করা হলো" বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব মশিউর রহমান। তিনি শনিবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এই মন্তব্য করেন।

আরেক পোস্টে রোববার তিনি লিখেন, "এনসিপি বিএনপি কিংবা জামায়াতের বিরোধিতা করতেছে না। একজন ব্যক্তির বয়ানকে আপনারা কেন এনসিপির বয়ান মনে করেন? অথচ, লোকটি এনসিপির সাথে যুক্ত নয়।

এনসিপি মনে করে, বিএনপি, জামায়াত, গণ পরিষদ সহ গত ১৬ বছরের মজলুম সকল দল আমাদের বন্ধু, যাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হতে পারে, প্রতিহিংসা নয়!"

এদিকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসুদ গতকাল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, "এমন বিভাজন আর বিভক্তি কারো জন্যেই কল্যাণ বয়ে আনবে না।

ফেইসবুকে পোস্টিয়ে যে বিভক্তি কিংবা বিভাজনকে আপনারা উস্কে দিচ্ছেন, এর পরিণতি পুরো জাতিকেই ভোগাবে। শুধুই বলবো আপনারা ফাঁদে পড়েছেন, অথবা অজান্তে নিজেরাই নিজেদের জন্যে ফাঁদ তৈরি করছেন। বলে রাখলাম।।। এবার অন্তত থামেন।

একই দিনে আরেক পোষ্টে তিনি লিখেন, "দয়া করে আওয়ামী বাইনারীগুলো প্রচার করে বিভেদে জড়াবেন না। ঐক্যের সময়ে বিভেদ চাই না। ফ্যাসিস্টবিরোধী ঐক্য যেকোন মূল্যে আমাদের আরো দৃঢ় করতে হবে।

সামনে বহু লড়াই বাকি। এসিরুমে বসে যদি ফীল করতে না পারেন তাহলে বের হয়ে শহরের বস্তিগুলোতে এসে ঘুরে যান, নদীভাঙনে ঘরবাড়ি হারা মানুষগুলোকে দেখতে আসুন, ফুটপাতে শুয়ে থাকা সর্বস্বহীন মানুষগুলোর গল্প শুনুন।

এই বিপ্লব কারো একার না, নিম্নবিত্ত -মধ্যবিত্ত -উচ্চবিত্ত সকল শ্রেণি-পেশার, যেখানে রাজনৈতিক কোন বাইনারী ন্যূনতম ফারাক তৈরি করতে পারেনি।"

মূলত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব আবু বাকের মজুমদারের বিতর্কিত পোষ্ট এবং জামায়াত শিবির ও ইসলামী দলগুলোর বিরোধীতার জবাবে এমন কথা বলেন এনসিপির নেতারা।

গত ৯ মে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ডাক দেন আওয়ামী নিষিদ্ধের দাবীতে যমুনা ঘেরাওয়ের, সেদিন রাতেই ঢাবি থেকে এনসিপির শ' দুয়েক নেতাকর্মী জড়ো হয় যমুনার সামনে।

রাতে যোগ দেন জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও সহকারী সেক্রেটারী দেলোয়ার হোসেন। সবাইকে যমুনার সামনে এসে যোগ দেয়ার আহবান জানান। জুম্মার নামাজের পর থেকে জামায়াত, শিবির, হেফাজতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও চরমোনাই সহ সকল ইসলামী দল ঝাপিয়ে পড়েন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবীতে।

যমুনা উপচে পড়ে জনসমাগমে। আন্দোলন চলে যায় শাহবাগ ব্লকেডে। পরের দিন শনিবার ও উত্তাল থাকে শাহবাগ। শনিবার সন্ধ্যার পর বসে উপদেষ্টা মন্ডলীর জরুরী বৈঠক। বৈঠক চলাকালেই এক ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় হাসনাত আব্দুল্লাহ। এক ঘন্টার মধ্যে দাবী আদায় না হলে আবারো যমুনা ঘেরাও হবে।

মিরপুর থেকে জামায়াতের মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিনের নেতৃতে বিশাল একটা মিছিল এসে যোগ দেয়। উত্তাল হয়ে উঠে শাহবাগ ও যমুনার আশপাশ। আওয়ামীলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয় রাতেই।

পরে আনন্দ মিছিলের সময় জাতীয় সংগীত গাইতে গেলে কেউ কেউ বাধা দেয়, উত্তেজিত জনতা বিভিন্ন দল থেকে আসা বিভিন্ন মতের লোক। সেটাকে কেন্দ্র করেই গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব আবু বাকের মজুমদার একের পর এক জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে পোস্ট দিতে থাকে।

ভিডিও ক্লিপসে দেখা গেছে হেফাজত বা ইসলামী আন্দোলনের জুব্বা পরা কয়েকজন বাধ সাধে, সেটাকে ইস্যু করেই জামায়াত শিবির ও ইসলামী দলগুলোর অবদান কে কয়েক ঘন্টার মধ্যে অসীকার করা শুরু হয়েছে। এতে করে ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলন ভবিষ্যতে বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

আমীরে জামায়াত শফিকুর রহমান নেতাকর্মীদেরকে উত্তেজিত না হয়ে ধৈর্য ধরার আহবান জানান।

 

 

এমএসএস

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর