নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের বেশি অপেক্ষার কারণ দেখি না: নজরুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ২২:০৪ পিএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও সরকারের চাওয়ার মধ্যে খুব বেশী পার্থক্য নেই। সরকার তো বলেনি ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে না। এজন্য আমরা বলেছি ডিসেম্বরের একটা তারিখ ধরে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হোক।

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ লেবার পার্টির নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে নজরুল ইসলাম খান বলেব, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ডিসেম্বরের বেশি অপেক্ষা করার কারণ আমরা দেখি না। এ ব্যাপারে যদি কেউ ভিন্নমত পোষণ করে তাহলে তাদেরকে যুক্তি দিয়ে বলতে হবে, কেনো এর বেশি সময় দরকার। সরকার বলেছে, ডিসেম্বর থেকে জুন। তারমানে কি? তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। আমরা বলেছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে এটাকে ধরে একটা রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। সরকার বলছে যে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তার মানে তারা তো বলেনি, যে ডিসেম্বর নির্বাচন হবে না। কিন্তু আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে এরকম একটা তারিখ ধরে রোড ম্যাপ ঘোষণা করা হোক। পার্থক্য তো খুব বেশি না। সরকার বলেছে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে, তার মানে ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। সরকারের কথা অনুযায়ী নির্বাচন ডিসেম্বরে হতে পারে, জানুয়ারি তো হতে পারে, ফেব্রুয়ারিতেও হতে পারে। কাজে আমাদের সঙ্গে সরকারের পার্থক্য তো বহু মাসের না। আমরা শুধু সরকারকে বলছি, এভাবে না বলে, এভাবে বলেন।

প্রশাসনে সব বিএনপির লোকজন বসে আছে, নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করার বিষয়ে জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, যিনি এ কথা বলেছেন তিনিও তো সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তাহলে তারা কি সব জায়গায় বিএনপির লোক বসাইছেন নাকি? বিএনপিকে তো প্রশাসন থেকে উৎখাত করা হয়েছে। বিগত সরকারের সময় কোথাও বিএনপির লোক ছিল না। যারা (আ. লীগের সময়) বৈষম্যের শিকার হয়েছিল, অন্যায় ভাবে যাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছিল, চাকরিচুৎ করা হয়েছিল, তাদের ৭০০ মত অফিসার ১১৪ জন সচিবসহ ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে একজনকেউ এখনো প্রদায়ন করা হয় নাই। তাহলে বিএনপির লোককে বসানো হলো কোথায়? যাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের একজন কেউ যদি প্রদায়ন করা হতো, তাহলে বলতে পারতেন বিএনপির লোক বসানো হয়েছে। তাহলে এই কথাটির যুক্তি কি? আপনারা তাদেরকে জিজ্ঞাসা না করে আমাদেরকে কেনো জিজ্ঞাসা করেন? আপনারা জানেন না এসব? তাহলে এ প্রশ্ন তাদেরকে জিজ্ঞাসা না করে, সরি, আমাদেরকে কেনো জিজ্ঞাসা করে কষ্ট দেন।

বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সকল মানুষের মিলনমেলায় আমরা একটি গণঅভ্যুত্থান করেছি।

তিনি বলেন, আজকের সরকার বিগত ৮ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা সকল রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এ জন্য তার কাছে আমাদের প্রত্যাশাও অনেক।অন্তর্বর্তী সরকার একটা স্বল্প সময়ের জন্য গঠিত হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। তিনি দায়িত্ব নেওয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল হয়েছে। তেমনি আমাদের প্রত্যাশার জায়গাটাও অনেক বেশি। আমরা মনে করি তিনি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে এ দেশের মানুষকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন। আমাদের দাবি হচ্ছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা রোডম্যাপ এই সরকারকে প্রণয়ন করতে হবে।

এর আগে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে বিএনপির লিয়াঁজো কমিটি প্রধান ও বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও বেগম সেলিমা রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান ইরান-এর নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর