রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী দেশের জন্য নতুন গঠনতন্ত্র তৈরি করবে: ফরহাদ মজহার

প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ২০:০৪ পিএম

কবি, গবেষক ও চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সামাজিক, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জনগণ বৃহত্তর রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। এই বৃহত্তর রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী দেশের জন্য একটি নতুন গঠনতন্ত্র গড়ে তুলবে।

শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ইমাজিনেক্সট ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ‘জাতীয় সংস্কৃতি: প্রেক্ষিত নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান হয়েছে বিপ্লব কিন্তু হয় নাই। এখন যে সাংস্কৃতিক লড়াই হবে-যেটা অপূর্ণ, যেটা আমরা করতে পারিনি, এটাকে সম্পূর্ণ করার লড়াই। সাংস্কৃতিক এ লড়াই, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পথ তৈরি হবে কীভাবে আমরা আগামী দিনে বৃহত্তর লড়াইয়ের জন্য তৈরি হব। আমাদের সেই সাংস্কৃতিক আন্দোলন সে বৃহত্তর লড়াই হচ্ছে নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা।’

সংবিধান ও গঠনতন্ত্রের তুলনামূলক আলোচনায় তিনি আরো বলেন, ‘সংবিধান মানে আইন। আমরা কিন্তু ঔপনিবেশিক শাসনে নেই। শাসক আইন প্রণয়ন করে, জনগণ গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করে। যখন আপনি সংবিধানের কথা বলবেন, তখনই আপনি একটা ঔপনিবেশিক শাসক। আপনি লুটেরা মাফিয়া শ্রেণির পক্ষে একটা শাসনতন্ত্র বানান, একটা আইন দিয়ে গরিবদের শোষণ করবেন, অধীনত্বে চলবেন। আর গঠনতন্ত্র মানে হল- নাগরিক একে অপরের সঙ্গে যারা বাস করে, একে অপরের সম্পর্ক কী হবে তার পথ তৈরি করে। এটা তৈরি করতে গিয়ে তারা সংস্কৃতির দিকে তাকায়। এখান থেকে তারা শিক্ষা নিয়ে একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠী গঠন করে ফেলে, যেটাকে বলা হয় রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী। এই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী তৈরি করবে নতুন গঠনতন্ত্র।’

তরুণদের উদ্দেশে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আসুন নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি, একটা নতুন গঠনতন্ত্র গড়ে তুলি। সেটা করার দিকে আমরা একটা শক্তিশালী সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলি।’

নিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সংগীতশিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম। সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ইমাজিনেক্সট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক জাফর ফিরোজ। সভায় গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সংবিধানের নানা ধারা বাতিল, নতুন ধারা প্রণয়ন নিয়ে বিস্তর আলোচনা, সমালোচনা হয়েছে। অন্যদিকে সংবিধান নিয়ে নানা তর্কে ফরহাদ মজহার গঠনতন্ত্র প্রণয়ণের পক্ষে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ২০২৪ এর জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত ছাত্র-জনতার বিপ্লব শুধু রাজনৈতিক অভিঘাত নয়, বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক নবজাগরণের সূচনাও বয়ে এনেছে। নতুন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক পরিচয় হবে ভাষা, ধর্ম ও জাতিগত বৈচিত্র্যের একত্রীকরণ, ঔপনিবেশিকতা ও সাম্প্রদায়িক মানসিকতা থেকে মুক্তি, ঐতিহ্য ও প্রযুক্তির যুগপৎ ব্যবহারে সংস্কৃতির জাতীয় রূপান্তর।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর