যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ০৬ জুলাই ২০২৫ ১৭:০৭ পিএম
আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৫ ৬:১৩ পিএম

ফাইল ফটো

আজ ১০ মহররম পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ এবং হৃদয় বিদারক ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, যা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বরণ করছে মুসলমানরা।

রোববার (৬ জুলাই) সকাল ১০টায় রাজধানীর হোসেনি দালান ইমামবাড়া থেকে বের হয় তাজিয়া মিছিল। তাজিয়া আরবি শব্দ। এর অর্থ শোক বা সমবেদনা। নানা আনুষ্ঠানিকতায় যথাযথ মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে মুসলিম ধর্মের শিয়া সম্প্রদায় মাতমের মধ্যে দিয়ে পালন করেছে ১০ মহররমের দিনটি।

এদিন বৃষ্টি উপেক্ষা করে হযরত ইমাম হোসেনের (র.) স্মরণে ছিল পুরান ঢাকা থেকে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত শোকযাত্রা। যাতে অংশ নেন হাজারো মানুষ।

ইসলামি গজলের করুন সুরে মিলিত কণ্ঠে হোসেনের নাম। মিছিলে মিছিলে খালি পায়ে শোকের মাতম ঢাকার পথে। ন্যায় এবং শান্তির ধর্ম ইসলাম। এই সুমহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে গিয়ে হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম হজরত ইমাম হোসেন ও তার পরিবারের সদস্য বিশ্বাসঘাতক এয়াজিদের সৈন্যদের হাতে ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে শহীদ হন। তাইতো আজও কারবালার হৃদয়বিদারক সেই ঘটনা বুক চাপড়ে স্মরণ করছে শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা।

শোকাবহ দিনটি উপলক্ষে প্রতিবছরের মত এবারও ঐতিহাসিক হোসেনি দালান ইমামবাড়া থেকে বের করা হয় সবচেয়ে বড় তাজিয়া মিছিল। যে কাফেলায় সকাল থেকেই অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ।

মূলত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেনের (রা.) কারবালার ময়দানে শহীদ হবার স্মৃতি তুলে ধরতে, হৃদয়পটে মনে রাখার চেষ্টায় এই তাজিয়া মিছিল। আগতরা বলেন, পবিত্র আশুরা জুলুম ও অবিচারের বিপরীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় মানবজাতিকে শক্তি ও সাহস যোগাচ্ছেন। এবারও শিশু থেকে বৃদ্ধ, যুবা সবাই মাতম করতে যোগ দিয়েছে তাজিয়া মিছিলে।

তাজিয়া মিছিল ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ বাকের রেজা বলেন, ঐতিহ্য মেনে মর্মান্তিক ঘটনা মনে করে শহরের নানা সড়কে মাতম করছে শিয়ারা। দিনটি উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে নগরজুড়ে।

সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ বাকের রেজা বলেন, ইমাম হোসেনকে এয়াজিদের সৈন্যবাহিনী হত্যা করেছিল। পৃথিবীতে আজ সমস্বরে হোসেনের নাম উচ্চারিত হচ্ছে কারণ তিনি মানবতার পক্ষে ছিল। তিনি বলেন, 'এই শোককে শক্তিতে পরিণত করতে হবে।'

হোসেনি দালান ইমাম বাড়া থেকে মিছিল শুরু হয়ে নীলক্ষেত, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সাইন্স ল্যাবরেটরি প্রদক্ষিণ করে ধানমন্ডি লেকের অস্থায়ী কারবালায় গিয়ে মিলিত হয়।

অন্য মিছিলটি মোহাম্মদপুর হয়ে সাত মসজিদ রোডে চলে যায়। বাড়তি নিরাপত্তায় এবার পুরো মিছিলকে ঘিরে সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। ছিল চার স্থরের নিরাপত্তা বলয়।

শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের এ মাতমের রীতি চলছে শত বছর ধরে। রেওয়াজ অনুযায়ী অশ্ব সৈন্যের সাজে অনেকে শোক পালন করে মিছিলের সামনে।

LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর