ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাব্বানীর ডাকসুর পদ ও ছাত্রত্ব বাতিল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ছাত্রত্ব ও ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদ বাতিল করেছে। এমফিল প্রোগ্রামে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি এবং ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে কারচুপি- সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার একাডেমিক কাউন্সিল সভায় সিদ্ধান্তটির বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ।
তিনি জানান, গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক অভিযোগ থাকায় বিষয়টি সিন্ডিকেটে তোলা হয় এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে তার অভিযোগগুলো ‘প্রমাণিত’ হওয়ায় কাউন্সিল তার ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, ক্রিমিনোলজি বিভাগের এমফিল ভর্তি ও ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ- উভয় ক্ষেত্রেই তাঁর জালিয়াতি প্রমাণিত হয়েছে। সিন্ডিকেটের সুপারিশ অনুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিল তাঁর ছাত্রত্ব বাতিল করেছে।
এর আগে চলতি বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট রাব্বানীসহ তিনজনের-গোলাম রাব্বানী, মেহজাবিন হক ও ফাহমিদা তাসনিম অনি-এমফিল ভর্তি সাময়িকভাবে বাতিল করে বিষয়টি একাডেমিক কাউন্সিলে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনজনই “সম্পূর্ণ অবৈধভাবে, জালিয়াতির মাধ্যমে” এমফিলে ভর্তি হয়েছিলেন। বৈধ ছাত্রত্ব না থাকার কারণে রাব্বানীর ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থিতাও আইনসম্মত ছিল না বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
তদন্ত কমিটি ২০১৯ সালের ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির প্রাথমিক প্রমাণও তুলে ধরে। ভোট কেন্দ্রে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ঢুকতে না দেওয়া, কৃত্রিম লাইন তৈরি, ব্যালট দখল, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ব্যালটে অবৈধ সিল মারা এবং অবৈধভাবে ভর্তি হয়ে নির্বাচন করা- এসব অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত বলে মন্তব্য করে কমিটি।
তবে অধিকতর তদন্ত ছাড়া চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া যাবে না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে ভুক্তভোগী জিএস প্রার্থী রাশেদ খান সিদ্ধান্তকে “ন্যায়বিচারের বিজয়” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “আলহামদুলিল্লাহ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গোলাম রাব্বানীর এমফিলের ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ছাত্রত্ব বাতিল হওয়ায় তাঁর ডাকসুর পদও অবৈধ হিসেবে প্রতীয়মান। ২০১৯ সাল থেকে আমার সংগ্রাম চলছিল; ২০২৫ সালে এসে ন্যায়বিচার পেলাম।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অবৈধভাবে ভর্তি হয়ে ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া সকলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ভুক্তভোগী প্রার্থীদের মূল্যায়নে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: