ইবিতে ফুলকুঁড়ি আসর তারারমেলা শাখার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নানামুখী আয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত:
১৪ নভেম্বর ২০২৫ ২২:১১ পিএম
ইবি প্রতিনিধি: “মনোবল সাহস আর হাতে রেখে হাত, নতুন স্বদেশে আনি আলোর প্রভাত” এই স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় শিশুকিশোর সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসরের ৫১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অভিভাবক সমাবেশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ফুলকুঁড়ি আসর তারারমেলা শাখা।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গগন হরকরা গ্যালারিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারা। এসময় চিত্রাঙ্কন, মাইন্ড ম্যারাথন, ফুটবল টুর্নামেন্টের বিজয়ী প্রতিযোগীদের পুরস্কার ও সনদ প্রদান করা হয়।
জানা যায়, সংগঠনটি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জেলার ১৮টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চিত্রাঙ্কন, মাইন্ড ম্যারাথন, ফুটবল টুর্নামেন্ট প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, সেরাদের সেরা ও বর্ষসেরা কুঁড়িদের পুরস্কৃত করা হয়। এতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী বিজয়ী পুরস্কার, ৭ জন সেরাদের সেরা ও একজন বর্ষসেরা কুঁড়ির পুরস্কার লাভ করেন। অতিথিবৃন্দ বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন।
ফুলকুঁড়ি আসর তারারমেলা শাখার পরিচালক খন্দকার আহনাফুজজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সহকারী পরিচালক মুবাশ্বির আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফুলকুঁড়ি আসরের কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক অগ্রপথিক মো: মাহফুজুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিন্নাতুল করিম, আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ এবিএম জাকির হোসেন ও অধ্যাপক ড. এরশাদ উল্লাহ, আইআইইআর এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আরিফা আক্তারসহ প্রায় ২ শতাধিক শিশু, কিশোর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় অবিভাবকের বক্তব্যে ড. এবিএম জাকির হোসেন বলেন, ফুলকুঁড়ি আসর কতৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠান একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান। এখানে অনেক স্টুডেন্ট আছে যারা কুষ্টিয়া- ঝিনাইদহের মধ্যে সেরাদের সেরা। আমি অবাক হই যে ফুলকুঁড়ি আসর কিভাবে এতো মেধাবীদের চিহ্নিত করে খুঁজে বের করলো। আমার মেয়ে ও আজ পুরস্কৃত হয়েছে। আমারা চাই ফুলকুঁড়ি আসর তাদের কার্যক্রমকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাক সেই প্রত্যাশা রইল।
প্রধান আলোচক মাহফুজুর রহমান বলেন, “আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ফুলকুঁড়ি আসর শিশুদের একাডেমিক মান নৈতিক, সাংস্কৃতিক মান বিকাশে সারাদেশে কাজ করে যাচ্ছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ছোট ছোট অর্জন মানুষকে বড় করে তোলে।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। সে অনুযায়ী নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করো। পড়াশোনা নিয়মিত হতে হবে। বাবা-মা, শিক্ষকদের আদেশ উপদেশ মানতে হবে। সময়নিষ্ঠ হতে হবে। স্মার্ট ডিভাইসকে স্মার্টলি ব্যবহার করা শিখতে হবে।”
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “শিশুর মনন বিকাশে অভিভাবকের আচরণ গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কিভাবে শিশুকে ডিল করছেন তা শিশু বিকাশে প্রভাব ফেলে। শিশুদেরকে পরিমিত সময় দিতে হবে। কোথায়, কিভাবে ব্যয় করছে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের লাইনচ্যুত হওয়ার অনেক পথ খোলা। তাই ছেলে-মেয়েকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সে কার সাথে চলাফেরা করে তা নজরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।”
অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই জানি যে আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশের কর্ণধার। এখানে তোমরা যারা বসে আছো, আজকে সবাই শিশু হিসেবে থাকলেও একদিন তোমরা এই দেশের নেতৃত্ব দেবে, একদিন তোমরা এদেশের মূল দায়িত্বশীল এর ভূমিকা পালন করবে। তো সেই জায়গা থেকে যারা ফুলকুঁড়ি আসরের সদস্য হিসেবে এখানে এসেছো, অভিভাবকবৃন্দ যারা এসেছেন, তাদের প্রতি আমার বক্তব্য থাকবে এরকমই:
ফুলকুঁড়ি একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আপনাদের বাচ্চাদেরকে আপনারা যারা ফুলকুঁড়ির সাথে সম্পৃক্ত রাখতে পেরেছেন, আমি মনে করি আপনাদের এটা একটি সৌভাগ্যের ব্যাপার যে আপনারা যত্নের মাধ্যমে আপনাদের ছেলে-সন্তানদেরকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন। ফুলকুঁড়ি যে পরিকল্পনা নিয়েছে, এই পরিকল্পনার সাথে আপনাদের ছেলে-সন্তানদেরকে আরও বেশি ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত করবেন।
সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, দক্ষতা, দেশপ্রেম—এই সকল বিষয়ের সমন্বয় ঘটিয়ে নিজের ক্যারিয়ারকে ডেভেলপ করা, পাশাপাশি পরিবারের বন্ডিং, সমাজের দায়িত্ববোধ, রাষ্ট্রের প্রতি ভালোবাসা, রাষ্ট্রের প্রতি তাদের কর্তব্য—এগুলো সম্পর্কে ফুলকুঁড়ি তার সদস্যদেরকে সময় সময় প্রশিক্ষণ দেয়, তাদেরকে সেভাবে উদ্বুদ্ধ করে, তাদেরকে সেভাবে গঠন করে। ফুলকুঁড়ি একটি ব্যতিক্রমধর্মী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এই নবীন সমাজের কাছে, কিশোরদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে কাজ করছে বলে আমি মনে করি।
LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: