ইবিতে ফার্মেসি বিভাগের নবীন বরণ ও প্রবীণ বিদায়

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০০:০৯ এএম

ইবিতে ফার্মেসি বিভাগের নবীন বরণ ও প্রবীণ বিদায়

ইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফার্মেসি বিভাগের নবীন বরণ ও প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠান -২০২৫ সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। 
 
এসময় বিদায়ী শিক্ষার্থীরা বলেন, আজ একইসাথে আনন্দ ও বেদনার দিন। একইসাথে প্রবীণদের বিদায় ও নবীনদের বরণের দিন আজ। বিদায় বলতে আমি একটা জিনিসই বুঝি যে তারা তাদের অর্জিত শিক্ষা ও জ্ঞানকে দেশের মানুষের জন্য, দেশের স্বাস্থ্যক্ষাতকে উন্নত করার জন্য প্রয়োগ করতে বের হয়ে যাবে। 
 
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, নবীনদের কাছে আমি সিজিপিএ চাই না। আমি চাই তোমরা ভালো মানুষ হও। তোমাকে দেখে সবাই যেন বলে যে ওই ছেলেটা ফার্মাসিতে পড়ে। বিদায়ীদের আমি প্রবীণ মনে করি না। কারণ তারা আজ থেকে বিভাগে রিপ্রেজেন্ট করবে। তারা আজ থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপ্রেজেন্ট করবে। তোমরা একদিন বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করবে ইনশাআল্লাহ। আমি বিশ্বাস করি তোমরা সকল জায়গায গিয়ে সফল হবে।
 
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃক্ষ তোর নাম কি ফলে পরিচয়। কোনো নতুন বিভাগ যখন খোলা হয় তখন তাদের খুব কষ্ট হয়। কিন্তু ছাত্ররা কখনও বসে থাকে না। আপনাদের বিভাগের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকার পরও কিন্তু আপনার ক্লাস-ল্যাব এসব করেই বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা আছে। আমাদের যে নতুন একাডেমিক বিল্ডিং হচ্ছে এগুলো হলে হয়তো এই সীমাবদ্ধতাগুলো থাকবে না আর। সমস্যা থাকার পরও যে আপনারা এগিয়ে যাচ্ছেন এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। আমি চাই আপনাদের মাধ্যমেই এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিত হোক। সমস্যাগুলো প্রশাসন সমাধান করার চেষ্টা অবশ্যই করবে। কিন্তু এর মধ্য থেকেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
 
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, বাংলাদেশে একসময় ব্যাথার মলম পর্যন্ত ছিল না এমনকি উপমহাদেশেই ছিল না। কিছু হাতুড়ে কবিরাজ ছিল। আমাদের পূর্ববর্তী শাসকরা এদেশে কোনো ওষুধ কোম্পানি তৈরি করেন নাই। তারা জুট মিল তৈরি করতো। অন্যান্য কারখানা তৈরি করেছিল। মানে তারা আমাদেরকে শ্রমিক হিসেবে ব্যাবহার করতে চেয়েছিল। 
 
তিনি বলেন, আমি ভারতে গিয়ে দেখলাম দুপুরের পর সকল ওষুধের দোকান শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত থাকে। আমি কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, ওষুধপাতি বেশি তাপমাত্রায় থাকলে তার মান নষ্ট হয়ে যায়। অথচ বাংলাদেশের বেশিরভাগ ফার্মেসি দোকানগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। ফলে ওষুধগুলোর মান নষ্ট হয়ে যায়। অথচ সরকার কোনো নিয়ম করেনি। 
 
এ বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠা হয় তখন চারটি বিভাগ নিয়ে খোলা হলেও বিজ্ঞানের কোনো বিভাগ ছিল না। তখন খুললে হয়তো আরও অনেক দূর এসব বিভাগ এগিয়ে যেত। ফার্মেসি বিভাগের কাছে আমার দাবি, আমরা যেন ভালো ভালো ওষুধের ফর্মুলা পাই এবং সেটা যেন উৎপাদিত হয়ে আমাদের কাছে আসে। চেন্নাই নয়, দিল্লি নয়, সিঙ্গাপুর নয়, থাইল্যান্ড নয়, এই বাংলাদেশেই বিশ্বমানের হাসপাতাল এবং ওষুধ তৈরি হতে হবে।
 
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন,  তোমাদের সবাইকে আজ খুবই স্মার্ট মনে হচ্ছে। আমি চাই এই স্মার্টনেসটা ধরে রাখো। স্মার্ট মানেই আধুনিক জামাকাপড় না। চলনে বলনে, কথাবার্তায়, শিক্ষাদীক্ষায় তোমরা স্মার্ট হও। এসময় উপাচার্য বিভাগে দুটি এসি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
 
উল্লেখ্য, ফার্মেসি বিভাগের এ নবীন বরণ ও প্রবীণ বিদায়ে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয় এবং বিদায়ী শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর