ইবি'র লালন শাহ হলে নতুন প্রভোস্টের দায়িত্ব গ্রহণ

মিজানুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান।
সোমবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় হল প্রভোস্ট অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এসময় চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
এছাড়াও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী এবং অন্যান্য হলের প্রভোস্ট, শিক্ষক, কর্মকর্তা, বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় লালন শাহ হলের বিদায়ী প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেনের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন নতুন প্রভোস্ট।
অনুষ্ঠানে লালন শাহ হলের বিদায়ী প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেন বলেন, "ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আবাসিক ছাত্ররা হলে থাকতে পারত না বরং মেসে থাকত। আর ছাত্রলীগ গণরুম থেকে অর্থ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছামতো সিটে উঠাতো। যে টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাপ্য ছিল সেই টাকা তারা নিজেরাই নিত। প্রশাসনকে এক টাকাও দিত না। আমার সময়ে এই হলে দুইটা র্যাগিং-এর ঘটনা ঘটেছিল এবং আমি সেই আমলেও এর যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বহিষ্কার করেছিলাম প্রশাসনের মাধ্যমে।"
তিনি আরো বলেন, "চার তলা থেকে পানি নিতে নিচে টিউবলে আসা লাগত, আমি সারা হলে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি, ছাত্রলীগের টর্চার সেলকে রিডিং রুমে রূপান্তরিত করেছি। ডাইনিংকে সুসজ্জিত করা, খাবারের মান বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। আমি আজকে প্রভোস্ট পদ থেকে বিদায় নিচ্ছি এবং আশা করছি নতুন প্রভোস্টের নেতৃত্বে এই হল আরো সুসজ্জিত হবে।"
নবনিযুক্ত প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান বলেন, "লালন শাহ হলের উন্নয়নের জন্য হলের পূর্ববর্তী প্রভোস্টরা অনেক কাজ করেছেন। আমি তাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখব। জুলাই বিপ্লবের চেতনা বুকে ধারণ করে বৈষম্যহীন হল গড়ে তুলব। আমি তারুণ্যের পূজারী। আমি সবসময় ছাত্রদের সাথে থাকতে চাই। আমি সর্বোচ্চটা দেব, আমার আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি থাকবে না। শীঘ্রই আমি ছাত্রদের সাথে মতবিনিময় সভা করব। হলে যে অসংগতিগুলো আছে সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।"
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, "প্রভোস্টকে এমন হতে হবে যেন হলের ছাত্ররা মনে করে তাদের একজন অভিভাবক আছেন। দায়িত্ব মানে হলো আগে যারা ভালো কাজ করেছে তাদের কাজ ধরে রাখা এবং নতুন করে আরো সম্প্রসারিত কাজ করা। হলের অগ্রগতি আরো ত্বরান্বিত করতে হবে। বাংলাদেশকে তরুণরাই পরিবর্তন করেছে। তাদের সতেজ রাখতে হবে। পড়াশোনার জন্য পাঠাগারের উন্নয়নে বিভিন্ন বইয়ের পাশাপাশি টেক্সটবুক সংযোজন করবেন। এতে আমরা প্রশাসন থেকেও সাহায্য করব। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিতে হবে। ছাত্ররা যেন সবদিক থেকেই উপযুক্ত হতে পারে।
ছাত্রদের সাথে বসতে হবে, কথা বলতে হবে। তারা যেন শুধু সার্টিফিকেটধারী না হয়ে স্বশিক্ষিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সর্বোচ্চ আটজন করে হাউস টিউটর থাকতে পারে। আমরা আগামীতে হলগুলোতে হাউস টিউটর দেব।"
এআরএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: