বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে
বৃষ্টির শঙ্কা নিয়ে সিলেট টেস্ট শুরু
আবহাওয়া পূর্বাভাসে ম্যাচের পাঁচ দিনই বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির শঙ্কার মাথায় নিয়েই আজ সিলেটে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। সকাল ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এই ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন। এর কারণ হলো- বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজটি সরাসরি সম্প্রচার করতে আগ্রহ দেখায়নি কোনো বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। সময়ের পরিক্রমায় এই দুই দলের মধ্যে বড় ব্যবধান তৈরি হয়েছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামলেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত! এমন দৃশ্য প্রতিনিয়ত দেখে আসছেন দর্শকরা। ফলে সাধারণ দর্শকদের মাঝেও এ সিরিজ ঘিরে আগ্রহ কম। তবে জিম্বাবুয়ে সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য বেশ অর্থবহ একটি সিরিজ হতে যাচ্ছে। কেননা ট্রানজিশন পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট।
বর্তমান দলে সিনিয়র পাঁচ ক্রিকেটারদের মধ্যে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আছেন মুশফিকুর রহিম। দলে তার জায়গাটাও নড়বড়ে। সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল অবসরে গেছেন। অনেক আগে থেকেই টেস্ট ক্রিকেট খেলেন না মাশরাফি বিন মুর্তজা। এই সিনিয়রদের যুগ পেরিয়ে নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। এই ট্রানজিশন পিরিয়ডে জিম্বাবুয়ে সিরিজটি তরুণদের জন্য সুযোগের মঞ্চ। ইনজুরির কারণে জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলছেন না তাসকিন আহমেদ। লিটন কুমার দাসও দলের বাইরে আছেন। ফলে তারুণ্যদীপ্ত দল নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গায় বোলিং অ্যাটাক। বিশেষ করে ধারালো পেস বোলিংয়েই বড় আস্থার জায়গা। তাই সিলেটে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার কথা জোর গলায় বলছেন প্রধান কোচ ফিল সিমন্স। তার অধীনে এই প্রথম ঘরের মাঠে টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। সিমন্স বলেছেন, প্রপার উইকেটেই খেলতে চান তারা। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ যে জায়গায় পৌঁছাতে চায়, সেখানে যেতে হলে স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে হবে। স্পোর্টিং উইকেটে তিন পেসার নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সিলেট টেস্টে নাহিদ রানা আর হাসান মাহমুদের সঙ্গে পেস অ্যাটাকে দেখা যেতে পারে তানজিম সাকিবকে। তাসকিনের জায়গায় আজ তার টেস্ট দলের ক্যাপ পরার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, আলোচনা হচ্ছে- বাংলাদেশের সাড়া জাড়ানো পেসার নাহিদ রানা আর জিম্বাবুয়ের মুজারাবানির মধ্যে লড়াইটা বেশ জমতে পারে।
এদিকে, বাংলাদেশের বড় উদ্বেগের বিষয় হলো ব্যাটিং। সর্বশেষ গত নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখ থুবড়ে পড়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। একমাত্র জাকের আলী ছাড়া অন্যরা ব্যাটিংয়ে বিবর্ণ ছিলেন। রানখরায় ভুগছেন অধিনায়ক শান্তও। অবশ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মুশফিকের ব্যাটিং রেকর্ড ভালো। শেষ তিন টেস্টে দুটি ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস রয়েছে তার। ব্যাটিংয়ে তাকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে। কেননা কিপিংয়ের দায়িত্বটা পালন করতে হবে না মুশফিককে। ফলে শুধু ব্যাটিংয়েই বেশি ফোকাস দিতে পারবেন এই উইকেটরক্ষক ও ব্যাটার। তবে লিটনের অনুপস্থিতিতে কে কিপিং করবেন, সেটি ম্যাচের দিনই জানা যাবে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে জিম্বাবুয়ে। পাঁচ বছর পর বাংলাদেশ সফরে টেস্ট সিরিজ খেলতে এসেছে দলটি। ২০১৮ সালে সিলেটের মাঠেই বাংলাদেশের মাটিতে দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের রেকর্ড গড়ে জিম্বাবুইয়ানরা। তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম উজ্জ্বল না হলেও এবার তারা চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। তাদের দলে ফিরেছেন ক্রেইগ আরভিন ও শন উইলিয়ামস। বাংলাদেশের কন্ডিশনে স্পিন খেলায় অভ্যস্ত এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে ১৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে ৮টিতে জিতেছে বাংলাদেশ। ৭টি ম্যাচে জিতেছে জিম্বাবুয়ে। বাকি ৩টি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: