ইবিতে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুন্নাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) শীর্ষক আলোচনা সভা

মিজানুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিরাতুন নবি (সা.) উপলক্ষে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সুন্নাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) শীর্ষক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
সিরাতুন নবি (সা.) উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক এবং ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামী শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ.ব.ম. ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী। এছাড়াও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় সিরাত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
এসময় শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, বর্তমান সমাজে প্রচলিত পুঁজিবাদ ও বৈষম্য যে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে, তা আমাদের সামনে স্পষ্ট। কিন্তু যদি আমরা মহানবীর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে পারি এবং মানুষকে সেই আদর্শে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলে সমাজ থেকে সব ধরনের জবরদস্তি, অত্যাচার ও হানাহানি দূর হয়ে যাবে। মহানবীর শিক্ষা অনুসরণ করলে শান্তি, ন্যায় এবং মানবিক মূল্যবোধ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে এটাই আমাদের প্রচেষ্টা হওয়াা উচিত। মহানবী আমাদের সামনে যে জীবনদর্শন, আদর্শ ও নীতি রেখে গেছেন, সেগুলো আজকের অস্থির ও ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ বিশ্বে সব সমস্যার সমাধানের জন্য সবচেয়ে বাস্তব ও প্রাসঙ্গিক। তিনি ছিলেন সহিষ্ণুতার নিদর্শন। তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কিভাবে ভিন্নমত ও ভিন্ন আদর্শের মানুষকে সহ্য করতে হয় এবং তাদের সঙ্গে মিলেমিশে সমাজ গঠন করতে হয়।
এ উদ্দেশ্যে তিনি যে মদিনা সনদ প্রণয়ন করেছিলেন, সেটি আজও পৃথিবীর ইতিহাসে একটি রোল মডেল—যেখানে ভিন্ন ধর্মের মানুষ একত্রে নিয়ে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিলেন।
তবে দুঃখজনকভাবে, ইতিহাস জুড়ে মহানবীর চরিত্র ও আদর্শকে নানাভাবে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হয়েছে এবং এখনও আমাদের দেশে তার বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়। আমরা বলি, আজকের পৃথিবী সভ্য, মানবিক, মানবাধিকারের এবং নারীর অধিকারের পৃথিবী কিন্তু বাস্তবে এসবের অনেকটাই ফ্যাশনের অংশে পরিণত হয়েছে। মহানবী (সাঃ) সেই সময়ই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যখন কন্যা সন্তান জন্ম নিলে তাকে জীবন্ত কবর দেওয়ার প্রথা চালু ছিল।
তিনি আরো বলেন, “এই মুহূর্তে মুসলমানদের মহানবীর রেখে যাওয়া আদর্শের গুণাবলী অর্জন করতে হবে। কিন্তু আমরা এখনো সেটি করতে পারছি না।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্বতন্ত্র গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে মহানবী (সা:) এর জীবন, আদর্শ ও কর্ম নিয়ে বিশেষভাবে গবেষণা করা হবে। সেই গবেষণার ফলাফলকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হবে, যাতে মহানবীর শিক্ষা ও নীতিমালা আরও বিস্তৃতভাবে পৌঁছে যায়।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ আমাদেরকে বিচলিত করছে। তবে এ সমস্যা মোকাবেলার জন্য আমরা প্রায়শই দূরের কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা করি, যা কার্যকর নয়। মহানবীর আদর্শ অনুসরণ করলেই আমাদের সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব।
LIMON
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: