জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবিতে একমত ৩০ দল

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:০৯ পিএম
আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:১০ পিএম

গণধিকার পরিষদে সমাবেশে ৩০ দলের নেতারা জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। সমাবেশের বক্তারা বলেন, জাতীয় পার্টি বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগের গুম খুন অবৈধ নির্বাচনের বৈধতা তো রাজনৈতিক দল ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতি করার অধিকার রাখে না।

শুক্রবার বিকেলে শাহবাগে গণধিকার পরিষদ আয়োজিত সংহতি সমাবেশে অংশ নেয়ার ৩০ দলের নেতারা এসব কথা বলেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, সম্প্রতি অনেকেই অনেক স্বপ্ন দেখছে। আমরা লক্ষ্য করছি, অনেকেই ভাবছেন জাতীয় পার্টি দিয়ে আবার এসে পড়বে। অনেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন, স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন দেখতে কিন্তু বাধা নেই। স্বপ্ন দেখতে পারেন। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে চ্যাপ্টার ক্লোজড। এই চ্যাপ্টার আর খোলার সুযোগ নাই। জনগণের ধাওয়ায় পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার আর ফিরে আসার কোন রকম নজির নাই। সুতরাং বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা একটি মৃত মানুষ।

সোহেল বলেন, এখন তো স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে, এখন তো স্বৈরাচার নাই। তাহলে নূরকে রক্তাক্ত করেছে কারা? আমরা বারবার বলেছি, প্রফেসর ইউনুস সাহেবকে, আপনার ইন্টারিম গভর্মেন্টর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে স্তরে হাসিনার আন্ডা বাচ্চা রয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে আপনি ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ব্যবস্থা কিছু কিছু হয়েছে, বেশি ক্ষেত্রেই হয় নাই। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা হয়েছে। এলোপ্যাথি চিকিৎসা হয় নাই।

সংহতি সমাবেশে তিনি আরও বলেন, এখানে আমরা যারা আছি, বিভিন্ন পলিটিকাল পার্টি করি। আমাদের মধ্যে চিন্তাভাবনার পার্থক্য আছে, আদর্শগত পার্থক্য আছে, আমরা পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে কথা বলি, এটি সত্য। এটি তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য কিন্তু একটি জায়গায় আমরা কিন্তু সব একই, সেটি হলো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে। আমরা সবাই একটা জায়গায় এক, এক শরীর এক মন, এক রক্ত এক জায়গা। ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে আর আমরা হতে দেব না।

ফ্যাসিস্টদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন সোহেল বলেন, একটি কথা মনে রাখবেন, ওই স্বপ্নের বাস্তবায়ন যদি বাংলাদেশে করতে আসেন বা রাস্তায় নামেন। আমরা কিন্তু আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবো না।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, এই হামলা শুধু নুর বা গণঅধিকার পরিষদের উপর হামলা ছিল না বরং বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও জুলাই বিপ্লবের উপর হামলা। এই হামলার মাধ্যমে ৫ আগস্ট যে ফ্যাসিবাদ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল, সেই ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের ফিরিয়ে আনার নতুন ষড়যন্ত্র। আমাদের দুর্ভাগ্য এই হামলার সাথে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা জড়িত রয়েছে। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা নুরের উপর হামলা করছে। ফ্যাসিবাদকে যারা শক্তি যুগিয়েছ সেই জাতীয় পার্টির বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন সুযোগ নেই। দুই হাজার শহীদ ও ত্রিশ হাজার আহতদের ওয়াদা করছি আমরা আজকে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ আছি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আগামীতেও ঐক্যবদ্ধ থাকব ইনশাআল্লাহ।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আলী আশরাফ আকন বলেন, ৫ আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী ইন্ডিয়ার দোসরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। সবাইকে লিখিত চুক্তি করতে হবে, সেই চুক্তি প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের কাছে পৌঁছাতে হবে। ফ্যাসিবাদের সহযোগী জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, আমরা পুরা সেনাবাহিনী বা পুলিশ বাহিনীকে দোষারোপ করছি না। গণঅধিকার পরিষদের সংবাদ সম্মেলন চলা অবস্থায় যারা হামলা করেছে, তারা কখনোই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্য হতে পারে না বরং তারা ফ্যাসিবাদের দোসর। তারা ফ্যাসিবাদের দোসর না হলে নুরুল হক নুরসহ আমাদের উপর হামলা করতে পারত না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে বলব, যারা এই হামলায় জড়িত, তাদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে অন্যথায় এর দায় এড়াতে পারবেন না। এই হামলা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অনুমতি ছাড়া সম্ভব হতে পারে না।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেএসডি সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভুঁইয়া, জমিয়তে উলামায় মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, এনডিএম মহাসচিব মোহাম্মদ মমিনুল হক, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা বিভাগের চেয়ারম্যান আবু মুসা বিল্লাহ্, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ও হেফাজত নেতা আতাউল্লাহ আমিনী, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হারুন, জনতার পার্টির চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম ভুঁইয়া প্রমুখ।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর