জুলাই সনদের খসড়ায় আমরা একমত: সালাহউদ্দিন আহমদ

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২৫ ২২:০৭ পিএম

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা যেটা পেয়েছি এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা। বিস্তারিত বিষয়গুলো ওখানে নাই সেটা পরে দেয়া হবে। এখন যেটা হয়েছে, সেই খসড়ার সাথে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু ওখানে কিছু বাক্য শব্দ গঠন প্রণালী ইত্যাদি নিয়ে কারো কোন মতামত আছে কিনা সেজন্য সব রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দিয়েছে। আমরা আমাদের যেগুলো সংশোধনী থাকবে ভাষাগত, বাক্যগত। অঙ্গীকারের বিষয়ে আমরা একমত

তিনি বলেন, আমাদের যা যা সংশোধনী অবজারভেশন থাকবে এটা আমরা কালকে জমা দেব। কিন্তু যে দুই বছরের ভিতরে এই প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমরা একমত। যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি জন্য আইন কানুন সংবিধান চেঞ্জ করার জন্য ওখানে বলা হয়েছে। সেটা তো বলারও প্রয়োজন নাই সেটার জন্যই তো এই প্রতিশ্রুতি। সেটার জন্যই তো এ কমিশন আসা।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় দফার ২১তম দিনের আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশে সুপ্রিম ল কোনটা? কনস্টিটিউশন সে কনস্টিটিউশনে বলা আছে কি? জনগণই সার্বভৌম। সার্বভৌম জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগ কিভাবে হয়? বোটের মাধ্যমে হয়। সেই বোটের মাধ্যমে যারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে তারা যায় কোথায়? সার্বভৌম পার্লামেন্টে। দেশে একটা জায়গায় সার্বভৌম জায়গা। সেটা হচ্ছে হাউস। পার্লামেন্ট হাউস। সেখানেই জনগণের জন্য জনগণ আইন প্রণয়ন করে। এবং জনগণ সেই আইনের দ্বারা শাসিত হয়। জনগণের আইনের দ্বারা জনগণ শাসিত হয়। তাহলে জনগণ যাদেরকে সার্বভৌম ক্ষমতা দিয়ে সার্বভৌম পার্লামেন্টে পাঠালো, আইনটা তো ওখানেই প্রণীত হবে। এবং সেই আইন প্রণয়ন নিয়ে তো কোন প্রশ্ন থাকা ঠিক নয়। কারণ আমরা যদি জনগণের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করি। আমরা যদি রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণ হিসেবে স্বীকার করি এবং সার্বভৌমত্ব ক্ষমতার সে প্রতিনিধিত্ব সার্বভৌম পার্লামেন্টে হয় স্বীকার করি তাহলে আইনটা তো ওখানেই প্রণীত হতে হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "আমরা সাংবিধানিক এবং সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।" তিনি বলেন, "কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের মধ্যে রাখতে হবে।"

তিনি বলেন, "যত বেশি কিছু সংবিধানে যুক্ত করা হবে, তত বেশি সংশোধন জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হোক।"

নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি—আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।

তিনি আরো বলেন, "আমরা চাই নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।"

ন্যায়পাল নিয়োগ নিয়ে বিএনপি এ নেতা বলেন, যেহেতু এখন পর্যন্ত ন্যায়পাল কোনোদিন ফাংশন করেনি, তাই আমরা প্রথমে চাই সেটি প্রতিষ্ঠিত হোক। এরপর তার আইন যুগোপযোগী করে, দায়িত্ব ও ক্ষমতা স্পষ্ট করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হোক।" তিনি বলেন, "ন্যায়পালকে শুধু তদন্তের ক্ষমতা না দিয়ে, তার প্রতিবেদনের বাস্তব প্রয়োগের জন্য আইন তৈরি করতে হবে। না হলে এই প্রতিষ্ঠান অর্থবহ হবে না।

সংস্কার কমিশনের ৭০০-এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "আমরা এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে একমত হয়েছি। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছি।"

তিনি বলেন, সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর