সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ১২:৪৫ এএম

জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় মৌলিক সংস্কার ছাড়া কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। ইনশাআল্লাহ, সংস্কার করেই নির্বাচন হবে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াতের আয়োজনে বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “আগামী নির্বাচনে কালো টাকা ও অপকর্ম রুখতে যুবকদের মাঠে থাকতে হবে। সব যুবককে এ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫৪ বছর ধরে যারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে মায়াকান্না করেছে, তারাই জাতির ক্ষতির জন্য দায়ী। আমরা সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করব। সংবিধানের পাহারাদার হবো। দেশের মালিক নয়, সেবক হবো, ইনশাআল্লাহ।”
আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “গত ১৫ বছরে আমাদের ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে অন্যায়ভাবে হত্যা ও বহু নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। তবু, বিপ্লব-পরবর্তী ১০ মাসে আমরা কোনো প্রতিশোধ নিইনি। আমরা অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে নয়, মানবিক রাষ্ট্র গঠনে জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে দেশে মবতন্ত্র চলছে। জামায়াত মব রাজনীতি সমর্থন করে না। জনগণ মব সন্ত্রাসীদের বিচার দেখতে চায়। মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী কঠোর অবস্থানে থাকবে।”
তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন ও জুলাই বিপ্লবে আবু সাঈদসহ অন্যদের হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এ নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না।
জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের ঢল নামে। তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে জনসভাস্থলেই দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায় করেন তারা।
জনসভায় বক্তব্য দেন দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকা জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে এসেছি। এখন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিজেকে উৎসর্গ করব।”
আবু সাঈদের জীবনের বিনিময়ে তার মুক্তি হয়েছে, উল্লেখ করে এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, “অন্যায়ভাবে যারা ১৫ বছর ইসলামপ্রিয় মানুষদেরকে জেল-জুলুম দিয়েছে, তারা মানবতাবিরোধী অপরাধী। এই কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দিতে হবে।”
শুক্রবার বিকেল ৩টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জামায়াতের আমিরের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জনসভা শেষ হয়। সভায় রংপুর অঞ্চলের ৩৩টি আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্যে দিয়ে উত্তরাঞ্চল সফর শুরু করেন ডা. শফিকুর রহমান। সেই ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত রংপুর বিভাগে তিনি ১০টি জনসভা করেন। এ টি এম আজহারুল ইসলামের কারামুক্তির পর আজ একাদশতম জনসভা করা হলো।
LIMON
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: