"৩৬ জুলাইয়ের ছাত্র জনতাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি, যাদের কারণে মুক্ত হয়েছি"
আপডেট: ২৮ মে ২০২৫ ১১:৩৭ এএম

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তি পেয়ে শাহবাগে শোকরানা সমাবেশে লাখো জনতার সামনে বক্তব্য দেন, এ সময় তিনি বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের ছাত্র জনতাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি, যাদের কারণে মুক্ত হয়েছি। বুধবার (২৮ মে) সকালে রাজধানীর পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান তিনি।
এর আগে, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। গত ৮ মে শুনানি শেষে রায়ের জন্য ২৭ মে দিন রাখেন আদালত।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৭ সদস্যের আপিল বিভাগ যে চার কারণে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিলেন তা হলো।
১। অতীতের রায়ে বাংলাদেশ সহ এই ভারতীয় সাব কন্টিনেন্টে ক্রিমিনাল বিচার ব্যবস্থার পদ্ধতি চেঞ্জ করে দেয়া হয়েছিল, এটা ছিল সবচাইতে বড় ভুল।
২। আদালতের সামনে উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ এসেসমেন্ট করা ছাড়াই জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম সাহেবকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল।
৩। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি travesty of truth অর্থাৎ বিচারের নামে অবিচার।
৪। যে সমস্ত তথ্য প্রমাণ আদালতে হাজির করা হয়েছিল, অতীতের আপিল বিভাগ তা সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রায়ে সর্বোচ্চ আদালত ২০১৪ সালে এ টি এম আজহারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায় এবং মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে আপিল বিভাগের দেওয়া আগের রায় বাতিল ঘোষণা করেন। এছাড়া অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতেও বলা হয়েছিল।
আদালতে আপিলকারীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মো. রায়হান উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম শুনানিতে অংশ নেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন তিনি।
এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে আজহারুলের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর আপিল বিভাগ রায় দেন। ২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগে আবেদন করেন আজহারুল। এই পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি লিভ মঞ্জুর করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে পাশাপাশি দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা দিতে বলা হয়। পরে আপিলের সংক্ষিপ্তসার জমা দেওয়া হয়। এই আপিলের ওপর শুনানি শেষে গতকাল তাকে খালস দেন আপিল বিভাগ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: