ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন
শিথিল করা হচ্ছে আচরণবিধি, প্রচারে সুবিধা পাবেন প্রার্থীরা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারের ক্ষেত্রে আচরণবিধি শিথিল করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রচারযন্ত্র (মাইক) ব্যবহার এবং ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডের সংখ্যা নিয়ে আরোপিত শর্তাবলি শিথিল করে প্রস্তাব গত সপ্তাহে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে কমিশন। এই পরিবর্তন কার্যকর হলে, জনসভার দিন প্রচারের সুযোগ বাড়বে এবং নির্বাচনি এলাকার কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিজিটাল প্রচারের ব্যবস্থা আরো সহজ হবে।
দলগুলোর দাবি ও নির্বাচনি বাস্তবতার নিরিখে এসব পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়।
ইসি সূত্রে জানা যায়, আগে একটি সংসদীয় আসনে দৈনিক সর্বোচ্চ তিনটি মাইক ব্যবহারের বিধান ছিল। প্রস্তাবিত নতুন বিধানে সেই শর্ত শিথিল করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত নতুন বিধানে বলা হয়েছে, যেদিন সংশ্লিষ্ট প্রার্থী বা দল জনসভার আয়োজন করবে, সেদিন তারা মোট ছয়টি মাইক ব্যবহারের সুযোগ পাবে। এই ছয়টির মধ্যে তিনটি মাইক জনসভার জন্য এবং বাকি তিনটি সাধারণ প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার যে কোনো স্থানে স্বতন্ত্রভাবে ব্যবহার করা যাবে। তবে জনসভার স্থানে তিনটির বেশি মাইক ব্যবহার করা হলে তা সরাসরি আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রার্থীর জন্য শাস্তি ও জরিমানার বিধান থাকবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরই ইসি এই শর্ত শিথিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা জানান, ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড বা ব্যানারের সংখ্যা নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচনি এলাকাগুলোতে যে অসঙ্গতি তৈরি হয়েছিল, তা এবার নিরসন হচ্ছে। আগে একটি সংসদীয় আসনে সর্বোচ্চ ২০টি ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপনের বিধান ছিল। কিন্তু অনেক সংসদীয় আসন ২৪ থেকে ৩০টি ইউনিয়ন বা একাধিক পৌরসভা নিয়ে গঠিত হওয়ায়, প্রতিটি প্রচার ইউনিটে একটি বোর্ডও স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছিল না, যা ছিল স্ববিরোধী।
নতুন প্রস্তাবে এই বৈষম্য দূর করা হয়েছে। এখন থেকে নির্বাচনি এলাকার অধীনে যতগুলো পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থাকবে, প্রতিটিতে একটি করে ডিজিটাল প্রচার যন্ত্র স্থাপন করা যাবে। যদি সংসদীয় আসনটি সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে পড়ে, তবে সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে ডিজিটাল ব্যানার বা ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করার অনুমতি থাকবে।
নির্বাচন কমিশন আশা করছে, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আইন মন্ত্রণালয় এই সংশোধনীগুলোর অনুমোদন দেবে।
নির্বাচন কমিশনের একজন উপসচিব জানান, আচরণবিধিতে প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু করণিক বৈষম্য ছিল, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দ্রুতই তা কার্যকর হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: