জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আইনশৃঙ্খলা ও এআই ভিডিও নিয়ন্ত্রণ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ২৩ আগষ্ট ২০২৫ ২০:০৮ পিএম

জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। সেই সঙ্গে প্রার্থীদের পেশীশক্তি ও এআই ভিডিওর মাধ্যমে কাদা ছোড়াছুড়ি নিয়ন্ত্রণ করাও বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তাই পুরো ভোটকার্যক্রম নিরাপদ রাখতে জাতীয় নির্বাচন নিরাপত্তা সমন্বয় সেল গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বলা হচ্ছে, বহু আলোচনা-সংলাপের পর নির্বাচনী ট্রেনে উঠেছে দেশ। কিন্তু সেই ট্রেন শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে নানা মহলে। যদিও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ড. ইউনূসের সরকার।

বিশ্লেষকদের মতে, একে একে সব অনিশ্চয়তা কেটে গেলেও থেকে যাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চ্যালেঞ্জ।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. আব্দুল আলীম বলেন, আমার কাছে মনে হয় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আইনশৃঙ্খলা, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ কারণে অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোকে সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি। প্রয়োজনে একটি সমন্বিত নির্বাচনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। তারা একটা রিস্ক ম্যাপিং করবে-আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কী কী ঝুঁকি আসতে পারে।

সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি কোনো পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ না করে এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তারা যদি নিরপেক্ষ থাকেন, তাহলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

আওয়ামী লীগের পতনের পর ভোটের মাঠে এবার বড় দল হিসেবে থাকছে একমাত্র বিএনপি। অন্যদিকে দু’একটি দলের প্রতি সরকারের আনুকূল্যের ইঙ্গিত রয়েছে। এমন অবস্থায় পেশীশক্তি বনাম নিরপেক্ষতার চ্যালেঞ্জকেও বড় করে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা যদি ছলেবলে কৌশলে নির্বাচনি বৈতরণী পার হতে চান, পেশীশক্তি ব্যবহার করেন, হুন্ডা-গুন্ডার আশ্রয় নেন বা মনোনয়ন বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে এগুলোই সুষ্ঠু নির্বাচনের বড় অন্তরায় হবে।

ড. আব্দুল আলীম বলেন, এখন সহনশীল হতে হবে, না হলে পরিবেশ খারাপ হয়ে গেলে তো নির্বাচনই বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্য প্রত্যেককে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। একটা বড় দলের দায়িত্ব হলো অন্য সব দল ও প্রার্থীকে বিবেচনায় নেয়া। সে যেমনই হোক না কেন, যত ছোট দলই হোক না কেন, তাদের প্রার্থীও একজন প্রার্থী, বড় দলের প্রার্থীও একজন প্রার্থী।

নির্বাচনের ডামাডোল শুরু হতেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে ভিডিও বানিয়ে বিভিন্ন দলের পক্ষে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। যেখানে স্পষ্ট কাদা ছোড়াছুড়ির বার্তা দেয়া হচ্ছে।

ড. আব্দুল আলীম বলেন, এআই-জেনারেটেড ভিডিও ও সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে কাদা ছোড়াছুড়ি করছে এবং যে ভাষা ব্যবহার করছে, যদি এটা চলতে থাকে তাহলে পরিবেশ খারাপ হয়ে যেতে পারে। এজন্য এগুলো মনিটরিং করা ও নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের সুযোগ সংকুচিত না করে বরং নির্বাচনি প্রক্রিয়া যতটা সম্ভব উন্মুক্ত রাখা উচিত, যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।

LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর