পরীক্ষা চলাকালে হলে প্রবেশ করে ছাত্রদল নেতার কলম-চকলেট বিতরণ
আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৫ ১২:০৩ পিএম
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি টেস্ট পরীক্ষা চলাকালে এক ছাত্রদল নেতার পরীক্ষা হলে প্রবেশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও–ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।
এর আগে দুপুরে বীজবাগ ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি নাজমুল হাসান মিরাজ পরীক্ষার সময় হঠাৎ পরীক্ষা হলে প্রবেশ করেন। পরে তিনি পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন এবং কলম–চকলেট বিতরণ করেন।
একই সঙ্গে স্কুলের শিক্ষক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ওয়াজদিয়া মাদরাসার শিক্ষক–শিক্ষিকাদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় পরীক্ষার্থীদের মনোযোগ ব্যাহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বৃত্ত পূরণের কাজ করছিলাম। এমন সময় বহিরাগত ও ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা কক্ষে প্রবেশ করে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কলম–চকলেট দেন। আমাদের বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা ছিল। তাদের কথাবার্তার কারণে মনোযোগ নষ্ট হয়। আমাদের শিক্ষকরা তাদের সহায়তা করেন।
এ ঘটনায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, পরীক্ষার সময় বহিরাগত প্রবেশ করলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয় এবং শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ব্যাহত হয়। স্থানীয়ভাবে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও সংশ্লিষ্টদের মত, পরীক্ষা চলাকালে আগন্তুক প্রবেশ রোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কঠোর ব্যবস্থা প্রয়োজন।
অভিযোগের বিষয়ে বীজবাগ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নাজমুল হাসান মিরাজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা পরীক্ষা চলাকালীন ঢুকিনি। পরীক্ষা ছিল ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত। ছাত্রদল লোগো দেওয়া টি–শার্ট পরেই প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে কলম–চকলেট বিতরণ করেছি। অনুমতি না দিলে তো প্রবেশ করতে পারতাম না।
জয়নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শুকদেব চক্রবর্তী ঢাকা পোস্টকে ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে সাবেক ছাত্র পরিচয় দিয়ে কয়েকজন তরুণ প্রবেশ করেছে। তারা কলম উপহার দেওয়ার কথা বলেছিল। পরে ফেসবুকে তারা ছাত্রদল পরিচয় দিলেও আমাদের কাছে তা গোপন রেখেছে। বিস্তারিত জানতে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলুন।
তবে প্রধান শিক্ষকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সেনবাগ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, পরীক্ষার হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারে না- এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। উপহার দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ইউএনও মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: