শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন: আমির হোসেন
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি, যেতে বাধ্য হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এদিন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় কবে হবে, তা ঠিক করতে আগামী ১৩ নভেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত।
আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, আজ রাষ্ট্রপক্ষ যে বক্তব্য দিয়েছেন সে প্রেক্ষাপটে আমি দুটো জবাব দিয়েছি। উনি বলতে চেয়েছেন যে আমার আসামি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে গেছেন। সেক্ষেত্রে আমি বলেছি যে আমার আসামি পালিয়ে যাননি। উনি এই দেশ থেকে যেতে চাননি, তা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাসহ সব জায়গায় এসেছে। উনি (শেখ হাসিনা) এ কথাও বলেছেন যে- আমাকে প্রয়োজনে এখানে মাটি দেন, হত্যা করেন, তবু আমি যাবো না। কিন্তু প্রেক্ষাপট এমন দাঁড়িয়েছে উনাকে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। উনি হেলিকপ্টারে গেছেন। দেশের মানুষ দেখেছে। অতএব পালিয়ে যাওয়া বলে চোরের মতো লুকিয়ে যাওয়াটাকে আমি ডিফেন্ড করেছি।
তিনি বলেন, অপর একটির বিষয়ে জবাব দিয়েছি। একটা কথা বলা হয়েছে যে প্রজন্মকে শেষ করে দিতে চেয়েছেন আমার আসামিরা। একটা মানবতাবিরোধী অপরাধ হতে হলে যে একটি সম্প্রদায়কে বা একটি জাতিকে অথবা একটি গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করার প্রক্রিয়া প্রচেষ্টা থাকতে হয়। সে হিসাবে মানুষকে হত্যা করতে হয় যা হিটলার করেছিল। ইহুদিদের ক্ষেত্রে জেনোসাইড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ দুটোই প্রযোজ্য। কিন্তু এখানে প্রযোজ্য নয়। এটাই আমার মূল বক্তব্য। তাই বাদিপক্ষ যেমন ন্যায়বিচার চান, আসামিপক্ষে আমরাও ন্যায়বিচার চাই। তবে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দায়িত্ব ট্রাইব্যুনালের। সেটা তারা নিশ্চিত করবেন, যা দেশের ও পৃথিবীর মানুষ দেখবে বলে আশা করছি।
একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বিদেশে ছিলেন, তখনকার প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছিলেন- প্রয়োজনে আসেন, এসে বিচারের মুখোমুখি হন। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রনিযুক্ত এই আইনজীবী বলেন, শেখ হাসিনা কথাগুলো বললেও উনি আসেননি। আমিও সেটার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছি, যে কারণে উনি আসেননি একই কারণে শেখ হাসিনাও আসেননি। আমি মনে করি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মামলা প্রমাণ করতে সক্ষম হননি রাষ্ট্রপক্ষ। তাই তারা খালাস পাবেন। সসম্মানে খালাস পাবেন বলেও আমার প্রত্যাশা।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিন ছিল আজ। এদিন তাদের বিচারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর এ মামলার রায়ের দিন নির্ধারণ করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: