গাজা পুরোপুরি দখল করা হবে কি না, সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের: ট্রাম্প

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ০৬ আগষ্ট ২০২৫ ১৩:০৮ পিএম

পুরো গাজা দখল করা হবে কিনা তা ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর গাজা দখলের পরিকল্পনায় হস্তক্ষেপ করবেন না এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর আলজাজিরার।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু পুরো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন খবর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এখন গাজার মানুষদের জন্য খাবার সরবরাহে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আর বাকি সবকিছু ইসরায়েলের ওপর নির্ভর করছে।”

আলজাজিরা জানিয়েছে, ওয়াশিংটন প্রতি বছর ইসরায়েলকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দিয়ে থাকে, যা ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইসরায়েল গাজায় বাস্তুচ্যুতির আদেশ জোর করে কার্যকর করছে। যার ফলে বর্তমানে গাজার প্রায় ৮৬ শতাংশ এলাকা ইসরায়েলি সামরিক অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। বাকি অংশে অভিযান চালালে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।

গাজা দখলের জন্য নেতানিয়াহুর কথিত পরিকল্পনা হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর হাতে আটক অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি করেছে।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা মিরোস্লাভ জেনকা সতর্ক করে বলেন, “গাজা সম্পূর্ণরূপে দখল করলে ‘বিপর্যয়কর পরিণতির ঝুঁকি’ থাকবে।”

জেনকা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, “আন্তর্জাতিক আইন এই বিষয়ে স্পষ্ট। গাজা ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং থাকবে।”

আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল গাজা উপত্যকা থেকে সব ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়ার দিকে মনোযোগ দিচ্ছে, যা জাতিগত নির্মূলের সমান হবে। এই পরিকল্পনা ট্রাম্প নিজেই ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ করেছিলেন।

ট্রাম্প সেই সময় গাজা থেকে সব ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নিয়ে ‘মধ্যপ্রাচ্যের একটি রিভিয়েরা’ নির্মাণের প্রস্তাব করেছিলেন।

গাজায় স্থল অভিযান সম্প্রসারণে ইসরায়েলের নতুন পরিকল্পনা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন গাজাজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মারাত্মক ক্ষুধা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে ক্রমবর্ধমান সমালোচনা চলছে।

মার্চ মাস থেকে ইসরায়েল গাজায় প্রায় সব সাহায্য প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে মার্কিন-সমর্থিত জিএইচএফ কেন্দ্রগুলো ফিলিস্তিনিদের খাবার পাওয়ার প্রায় একমাত্র জায়গা হয়ে উঠেছে।

তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রায় প্রতিদিনই জিএইচএফ কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়ে হত্যা করছে। তা সত্ত্বেও, জাতিসংঘকে সাহায্য বিতরণের অনুমতি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বানের পরেও যুক্তরাষ্ট্র জিএইচএফকে সমর্থন করে চলেছে।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, ইসরায়েল গাজায় কিছু খাদ্য ট্রাক এবং বিমান থেকে ত্রাণ বিতরণের অনুমতি দিয়েছে, কিন্তু এসব সীমিত সাহায্য ফিলিস্তিনিদের চাহিদা পূরণের থেকে অনেক দূরে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬১ হাজারেও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন ও বেশিরভাগ ভূখণ্ড ধ্বংস হয়ে গেছে। এটিকে মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছেন।

LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর