কলাপাড়া হাসপাতালে রোগী সেবার করুণ চিত্র: দায়িত্বে অবহেলা ও প্রশ্নবিদ্ধ আচরণের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত:
১৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৮:১২ পিএম
মোঃ জাহিদ তালুকদার, কলাপাড়া (পটুয়াখালী): কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী সেবায় চরম অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ১৪ ডিসেম্বর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত এক রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে গেলে এমন করুণ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন স্বজন মোঃ জাহিদ তালুকদার।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর অবস্থা ছিল অত্যন্ত গুরুতর। রোগীকে খাটে করে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে প্রবেশের পরপরই ডিউটি ডাক্তারের কাছে নেওয়া হলে সেখানে দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ পলি সাহা (মেডিকেল অফিসার)। কিন্তু তিনি রোগীকে শারীরিকভাবে পরীক্ষা না করেই অবহেলার পরিচয় দেন বলে অভিযোগ করা হয়। রোগীর জ্বর ছিল, হাত-পা বাঁকা হয়ে আসছিল—এমন গুরুতর উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও প্রেসার ও জ্বর মাপার অনুরোধে তিনি গুরুত্ব দেননি।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ডাঃ পলি সাহা জরুরি ভিত্তিতে কিছু পরীক্ষার কাগজ ধরিয়ে দেন এবং নির্দিষ্ট একটি ল্যাবে পরীক্ষাগুলো করাতে বলেন। রোগীর স্বজন অন্য কোনো পরিচিত ল্যাব থেকে পরীক্ষা করানোর অনুমতি চাইলে তিনি তা সরাসরি নাকচ করে দেন এবং বলেন, “এই ল্যাব ছাড়া আমার আর কারো উপর ভরসা নেই।” এতে হাসপাতালের অন্যান্য ল্যাবের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
পরবর্তীতে পরিচয় প্রকাশের পর আচরণে পরিবর্তন আসে বলে অভিযোগ করা হয়। তখন তিনি জানান, আপাতত টেস্ট করানোর দরকার নেই। বিষয়টি রোগী সেবায় বৈষম্য ও পেশাগত নৈতিকতার পরিপন্থী বলে মনে করছেন ভুক্তভোগী।
অভিযোগ রয়েছে, ভর্তি থাকা প্রায় দুই দিনেও একবারের জন্যও ওই রোগীকে দেখতে যাননি ডাঃ পলি সাহা।
এদিকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নেওয়ার সময়ও চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় রোগীর স্বজনদের। প্রায় ২০–২৫ মিনিট অপেক্ষার পরও ডিউটি ডাক্তারকে পাওয়া যায়নি। প্রায় ৩০ মিনিট পর ডাঃ আব্দুল মালেক (মেডিকেল অফিসার) আসেন। তাকে বিষয়টি জানালে তিনি গম্ভীরভাবে জানান, “লোক রেখে একটু খেতে গিয়েছিলাম।” অথচ তার জন্য বহু রোগী অপেক্ষায় ছিলেন।
ভুক্তভোগীর দাবি, অফিস সময়েই ফ্রি টিকিটে রোগী দেখানোর সময় পরীক্ষার রিপোর্ট থাকা সত্ত্বেও তা দেখতে দেরি করা হয়, ফলে রোগীদের অযথা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
এই ঘটনায় কলাপাড়া হাসপাতালের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা ও রোগী সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, এমন অবহেলা চলতে থাকলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে গরিব ও অসহায় মানুষ।
এ বিষয়ে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
শেষে ভুক্তভোগী মোঃ জাহিদ তালুকদার বলেন,
“কি চলছে কলাপাড়া হাসপাতালে? সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে। গরিব মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে। সচেতন মহলের কাছে আমার আকুল আবেদন—আপনারা প্রতিবাদ করুন, আমি আপনাদের সাথে আছি।
LIMON

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: