প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া, গায়ে আগুন দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা

কিছুদিন পরই সন্তানদের নিয়ে আমেরিকায় স্বামীর কাছে যাওয়ার কথা ছিল গৃহবধূর ঝর্ণা বেগমের (৩৫)। অথচ সেই স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ওই গৃহবধূ। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে কেরোসিন তেলের বোতল ও লাইটার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ঝর্ণা বেগম কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী গ্রামের আমেরিকা প্রবাসী হাফেজ সিদ্দিকুর রহমান তালুকদারের স্ত্রী এবং দুই সন্তানের জননী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত গৃহবধূর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবস্থান করায় ঝর্ণা বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রায়ই কথাকাটাকাটি হতো। সকালে এ নিয়ে ঝগড়ার পর বেলা ১১টার দিকে তিনি নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ধোঁয়া বের হতে দেখে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রতিবেশী শাওন জানান, আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে কাকির (ঝর্ণা বেগম) রুম থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় রুমের জানালার গ্লাস ভেঙে দেখি শুধু ধোঁয়া বের হচ্ছে। সেই সঙ্গে মাংস পোড়া গন্ধ। পরে আশেপাশের লোকজন নিয়ে শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি পুরো শরীর পুড়ে ফ্লোরে লেপ্টে রয়েছে।
নিহতের বড় ছেলে হাফেজ সাকিব তালুকদার জানান, বাবা প্রায় ১০ বছর ধরে আমেরিকায় আছেন। গতবছর সর্বশেষ বাড়িতে এসেছিলেন। মা, আমি ও ছোট ভাই ইউসুফ তালুকদারের পাসপোর্ট বাবা নিয়ে গেছেন। আমি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। আর কিছুদিন লাগবে শেষ হতে। এরপরই আমাদের আমেরিকায় চলে যাওয়ার কথা। সেখানে বাবা ছাড়াও তিন চাচা ও এক ফুফু তাদের পরিবার নিয়ে থাকেন। মা কেন যে এমনটা করলো আমরা বুঝতে পারছি না।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার হাফিজুর রহমান জানান, খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। আগুনে ঝর্ণা বেগমের শরীরের প্রায় ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হয়ত কোনো অভিমানে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: