আফগানদের হারিয়ে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

পেন্ডুলামের মতো দুলেছে ম্যাচের ভাগ্য। জয়ের কাঁটা একবার বাংলাদেশের দিকে তো আরেকবার আফগানিস্তানের দিকে হেলেছে। রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে বসা ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত ৮ রানের জয় পেয়েছে লিটন দাসের দল। সেই সঙ্গে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে সুপার ফোরের আশাও বাঁচিয়ে রাখল টিম টাইগার্স।
আবুধাবিতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন তামিম। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৪৬ রানেই থামে আফগানিস্তানের ইনিংস। মুস্তাফিজুর রহমান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে জয় পেতে সহজ হয় টাইগারদের। তবে মাঝের ওভার বেশ ভালোভাবেই টিকে ছিল আফগানরা। শেষ দিকে ফিজের জোড়া উইকেটে ম্যাচ থেকে একবারে ছিটকে যায় রশিদ খানের দল।
রান তাড়ায় প্রথম বলেই উইকেট হারিয়েছে আফগানিস্তান। সেদিকউল্লাহ অটলকে এলবিডব্লু করে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। প্রথম ওভারে কোনো রান দেননি নাসুম। পরের ওভারে সাফল্য পেতে পারতেন তাসকিনও। তার ওভারের শেষ বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ ফসকান রিশাদ হোসেন। ‘জীবন’ পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি ইব্রাহিম জাদরান। নাসুমের ফিরতি ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন।
পাওয়ারপ্লেতে মাত্র ২৭ রান দেয় বাংলাদেশ। এরপর ম্যাচ দুদিকেই হেলেছে। নিয়মিত বিরতিতে বাংলাদেশ সাফল্য পেলেও বাউন্ডারি হাঁকিয়েছে আফগানরাও। বেশ খরুচে ছিলেন শামীম-সাইফ হাসানরা।
অন্যদিকে রহমানউল্লাহ গুরবাজ এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাই বড় রানের দেখা পেলেও বাকিরা তেমন কিছু করতে পারেননি। রশিদ খান ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ২০ রান করলেও ব্যর্থ হয় তার চেষ্টা। শেষ দিকে কেবল জয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন নুর আহমেদরা। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকার করেছেন মুস্তাফিজ। এছাড়া দুটি করে পেয়েছেন নাসুম, রিশাদ ও তাসকিন।
এর আগে দিনের শুরুতে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লিটন দাস। অধিনায়কের নেয়া সিদ্ধান্ত অবশ্য সঠিক প্রমাণ করেন দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও তানজিদ তামিম। এক প্রান্তে তামিম আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করলেও আরেক প্রান্তে রান তুলতে বেশ বেগ পান সাইফ।
সাইফ উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। পাওয়ার প্লে শেষেই ফিরেছেন তিনি, ২৮ বলে ৩০ রানে। এরপর তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি লিটন দাসও, ১১ বলে ৯ রান করে। এরপর ২৮ বলে ফিফটির পর অবশ্য আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তামিম। ফিরে যান ৫২ রানে থাকা অবস্থায়।
পাঁচে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে চেয়েছিলেন শামীম পাটোয়ারী। তবে ফিরে যান ১১ রান করে। মিডল অর্ডারে তাওহীদ হৃদয় ক্রিজে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২০ বল খেলে ২৬ রান করেন। শেষদিকে জাকের আলি রীতিমতো সংগ্রাম করেছেন। ১৩ বল খেলে অপরাজিত মোটে ১২ রান করেন তিনি। যদিও নুরুল হাসান সোহান ৬ বলে অপরাজিত ১২ রান করেন।
জিতলে টিকে থাকবে আশা, হারলেই বিদায়-কাযত বাঁচা-মরার এমন সমীকরণের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ যখন আফগানিস্তান, ভয়টা কিছুটা ছিলই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টিতে ছড়ি ঘুরানো রশিদ খানদের বিপক্ষে শুরু থেকেই দাপট বজায় রেখেছে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে শুরুর ঝলক শেষ দিকে মিলিয়ে গেলেও বল হাতে আগুনে শুরু এনে দেন নাসুম-রিশাদরা। আর তাতে বিদেশের মাটিতে আফগানদের প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে হারাল লাল-সবুজের দল।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: