ঢাকার অলি গলিতে জামায়াতের সমাবেশ ঘিরে উৎসবের আমেজ

সাত দফা দাবিতে আয়োজিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশের এলাকা এখন উৎসবমুখর। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চযোগে রাজধানীতে এসেছেন নেতাকর্মীরা।
গত এক মাস ধরে সমাবেশ সফল করতে তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীরা প্রচারণা, গণসংযোগ এবং জনমত গঠনে সরব ছিলেন। এর প্রভাব পড়ছে ঢাকার অলিগলি, সড়ক-মহাসড়ক, মোড় ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়। পোস্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে শহরের চিত্র। সমাবেশকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পতাকা, দলের নাম লেখা গেঞ্জি, পোস্টার ও নানা ধরনের প্রকাশনার বিকিকিনি চলছে।
শনিবার সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হচ্ছেন জেলা ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা এবং দিনব্যাপী বক্তব্য রাখার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলছে। মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা ২টায়, যেখানে সভাপতিত্ব করবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুধু জামায়াত নয়, সমমনা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও যোগ দেবেন এই সমাবেশে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা, রাজধানীর শাহবাগ, কাকরাইল, মৎস্যভবন টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকায় দলটির নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। ছোট ছোট গ্রুপ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করছে তারা। কারো হাতে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকও ছিল। আগত অধিকাংশ নেতাকর্মীদের গায়ে পাঞ্জাবি থাকলেও কারো কারো গায়ে সাদা গেঞ্জি পড়তে দেখা গেছে। গেঞ্জিতে লেখা রয়েছে, ‘তারুণ্যের প্রথম ভোট, চাঁদাবাজের বিপক্ষে হোক’, ‘দাঁড়িপাল্লা ভোট দিন’। কেউ আবার স্লোগানের মাধ্যমে দাঁড়ি পাল্লায় ভোট চাইছেন। কেউ বা বলছেন আস্থার প্রতীক দাঁড়ি পাল্লা। এছাড়াও নানা স্লোগানে মুখরিত ঢাকার রাজপথ।
লক্ষ্মীপুর থেকে আসা দলটির নেতাকর্মীরা জানান, সমাবেশ নয় এটি আমাদের জন্য একটি উৎসব। দীর্ঘ ১৭-১৮ বছর নানা নির্যাতন আমাদের উপর গেলেও আমাদের জনপ্রিয়তা কমেনি। আজ এমন জনস্রোতই তার প্রমাণ। তিনি বলেন, আমরা আজ উল্লসিত। মনে হচ্ছে দেশের জনগণ নতুন করে প্রাণ ফিরে পাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। নির্বাচনের আগে এ ঢল থামবে না।
বাসুর হাট থেকে আসা আরেক কর্মী জানান, সমাবেশে অংশ নেয়ার জন্য আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছি। মুখিয়ে ছিলাম কখন সমাবেশে আসবো, কখন প্রাণ খুলে স্লোগান ধরবো। তিনি বলেন, আজকের এই জনস্রোত ই প্রমাণ করে জামায়াতের উপর দেশের মানুষের আস্থা নির্ভর কতটুকু।
জামায়াতের সাত দফা দাবি হলো- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: