অনিয়মে জড়িত পুলিশ সদস্যদের নেতৃত্বে রাখা হবে না: আইজিপি
ক্রসফায়ার দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাই না মন্তব্য করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, যারা অনিয়মে জড়িত বা যাদের পরিশুদ্ধি সম্ভব নয়, এমন কোনো পুলিশ সদস্যকে নেতৃত্বের দায়িত্বে রাখা হবে না।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে খুলনায় নির্বাচন উপলক্ষে পুলিশের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও কোনো ফল হবে না উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, কত সেন্টার বন্ধ করবেন? ইলেকশন কেউ ঠেকাতে পারবে না। এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে পুলিশকে বিতর্কিত করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব ও অন্যায় করতে বাধ্য করা হয়েছে। যে কারণে বিগত দিনের সকল ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ। এ কারণেই পুলিশের সকল ইউনিটের সদস্যদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার চায় একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। ফলে এবারের নির্বাচনে পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক। এ কারণে আমরা ট্রেনিং নিয়ে প্রশিক্ষিত হচ্ছি।’
এবারই প্রথম পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন নিয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত তিনটি নির্বাচনে পুলিশকে দিয়ে অন্যায় করিয়ে বিতর্কিত করা হয়েছে। ফলে এবার স্ব-উদ্যোগে প্রশিক্ষণ নিয়ে বিগত দিনের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে একটি সু-শৃঙ্খল নির্বাচন করা হবে। তবে, এর মধ্যে যে-সব পুলিশ সদস্য এখনও সংশোধন হতে পারেনি বা পারবে না তাদের নির্বাচনে মূল নেতৃত্বে দায়িত্ব দেওয়া হবে না। বিতর্কিতদের চিহ্নিত করতে রেঞ্জ ডিআইজি এবং পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারিতে দায়িত্ব বণ্টনের সময় বিষয়টি দেখা হবে।
নির্বাচনে পুলিশ সঠিক দায়িত্ব পালন করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে আইজিপি বলেন, মানুষ নির্বাচনের জন্য উদগ্র্রীব হয়ে আছে। তবে পুলিশের একার পক্ষে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। এজন্য সকলের সহযোগিতা নিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব হবে।
আর্টিফিসিয়্যাল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিস এবং ডিজ ইনফরমেশন দিয়ে ফেইক নিউজ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে- এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এসব বিষয় দেখা হচ্ছে। তবে স্বাধীনতার নামে কতটুকু করতে বা লিখতে পারা যাবে সে বিষয়েও আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত খুব বেশী অগ্রগতি হয়নি। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১৯টি হত্যা ও ৩৭টি অন্যান্য মামলায় ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও ৩০-৩১ জনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ৫ আগস্টের পরে কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হলে তাদের ১৭৩ অধ্যাদেশের মাধ্যমে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট থানা থেকে আদালতে সুপারিশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ডিএমপিকে ২ সহস্রাধিক ব্যক্তিকে মামলায় হয়রানি না করার জন্য বলা হয়েছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি রেজাউল হক ও কেএমপি কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দারসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: