এজেন্ডা ছাড়াই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপ বৃহস্পতিবার

নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:১১ এএম

সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা ছাড়াই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সকাল ও বিকালে দুই দফায় ১২টি দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণপত্রে কোনো এজেন্ডার কথা উল্লেখ নেই। ধারাবাহিকভাবে অন্য দলগুলোকে সংলাপে ডাকা হবে।

জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকরাও ডাক পাবেন। তবে নিবন্ধন স্থগিত থাকায় আওয়ামী লীগকে এ সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। প্রথম দিন সকালের সংলাপে যেসব দলকে ডাকা হচ্ছে সেগুলো হলো-লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। এদিন বিকালে ডাকা হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএম।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্তের কথা মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের জানান কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে ১৩ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনি সংলাপে বসতে যাচ্ছে ইসি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব নিবন্ধিত দল নিয়েই আলোচনা করা হবে।’

দলগুলোর সঙ্গে কী বিষয়ে আলোচনা হবে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘আরপিও ও আচরণবিধিতে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তাদের সহযোগিতা-এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব। তাদের বক্তব্য শুনব।’

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার আগেই আরপিও ও আচরণবিধি সংশোধনীর বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি উত্তর দেননি সচিব। দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের ভিত্তিতে আরপিও ও আচরণবিধিতে পুনরায় সংশোধন করা হবে কি না-জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘অপেক্ষা করেন।’

১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি আছে, সেদিন নির্বাচনি সংলাপ আয়োজন করা যাবে কি না-জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমাদের ব্যবস্থা রাখব। সংলাপ, আলোচনা বা মতবিনিময় যেটাই বলি না কেন, ১৩ তারিখে আমরা নিশ্চয়ই সেটা করব।’

ইসির প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর অনাস্থা কাটিয়ে ওঠা গেছে কি না-জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, সব দল সংলাপে পজিটিভ রেসপন্স করবে। আমরা আগাগোড়া দুটি বিষয়ে একটু পিছিয়ে ছিলাম। একটা হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় বা সংলাপ। দ্বিতীয়টা হচ্ছে পর্যবেক্ষকদের নিবন্ধন।’

সীমানা পুনর্নির্ধারণ : বাগেরহাটের সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, বাগারহাটে কনস্টিটিয়েন্সি আগে চারটি ছিল। সেটা কমিয়ে তিনটি করে নির্বাচন কমিশন গেজেট করেছিল। ওই তিনটির সিদ্ধান্ত বাতিল করে চারটি পুনর্বহল করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটা পাওয়ার পর কমিশন এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে, আপিলে যাবে নাকি এটা মেনে নেবে। এখন পর্যন্ত আমরা সার্টিফাইড কপি পাইনি। তিনি জানান, সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে ৩০টির বেশি রিট হয়েছে।

সীমানা জটিলতা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কি না-জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, পড়তে পারে। কেননা সীমানার ব্যাপারটি প্রাসঙ্গিকভাবে নির্ভর করছে আদালতের আদেশ কীভাবে কমিশন পর্যালোচনা করবেন বা তার পরবর্তী পদক্ষেপ কীভাবে নেবেন সেটার ওপরে। সে পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করি।

আচরণবিধি সংশোধন : ব্রিফিংয়ে আচরণবিধিতে কী কী পরিবর্তন এসেছে, তা উঠে আসে। সংশোধিত আচরণবিধির বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনে পোস্টারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একটা জনসভায় একজন প্রার্থী তিনটির বেশি মাইক ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে প্রার্থী একাধিক জনসভা একটার পর একটা করলে, তিনটা করে মাইক ব্যবহার করতে পারবেন। সেখানে তো বাধা নেই। তিনি বলেন, লিফলেট করা যাবে। ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডও ব্যবহার করা যাবে। তবে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কোনো স্থাপনা তৈরি করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধির গেজেট সোমবার মাঝরাতে প্রকাশ করে ইসি।

গণভোট প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, আমি অতীতেও বলেছি, আজও বলছি, গণভোট সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনে বা ইসি সচিবালয় পর্যায়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা পাইনি।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর