দেশ বিক্রির যে সাত দফা চুক্তির বিনিময়ে ভারত মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল
আপডেট: ১৬ আগষ্ট ২০২৫ ২:২৬ পিএম

১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ ভারতকে যুদ্ধে সহায়তা এবং স্বীকৃতি দিতে বলেন। কিন্তু ভারত সহায়তার জন্য আগে চুক্তি করতে বলে, তাই তাজউদ্দীন আহমদ একটি গোপন চুক্তি করার পরিকল্পনা করেন, যার প্রেক্ষিতে ভারত বাংলাদেশকে যুদ্ধে সহায়তা করতে সম্মত হয় এবং উপযুক্ত সময়ে স্বীকৃতির কথা জানায়।
তাজউদ্দিনের পরিকল্পনায় প্রবাসী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও ভারতের একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে ৭ দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিগুলোর ভয়াবহতা এতই ব্যাপক ছিলো যে, চুক্তি সই করার পরে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অজ্ঞান হয়ে পড়েন। মূলত চুক্তিগুলো ছিল বাংলাদেশ বিক্রির চুক্তি।
কি ছিল ৭ দফা চুক্তিতে?
১. প্রশাসনিক বিষয়- যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে শুধুমাত্র তারাই শুধুমাত্র তারাই প্রশাসনিক পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে। বাকি শূন্য জায়গাগুলো পূরণ করবে ভারতীয় কর্মকর্তাবৃন্দ।
২. সামরিক উপস্থিতি - বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভারতীয় সেনাবাহিনী অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাংলাদেশে থাকবে।
৩. নিজস্ব সামরিক বাহিনী- বাংলাদেশের নিজস্ব কোনো সেনা বাহিনী থাকবেনা। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব থাকবে ভারতের উপর ন্যস্ত থাকবে।
৪. অভ্যন্তরীন আইনশৃঙ্খলা: অভ্যন্তরীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মুক্তিবাহিনীকে কেন্দ্র করে একটি প্যারামিলিশিয়া বাহিনী তৈরি করা হবে, যার প্রশিক্ষণে থাকবে ভারত। (পরবর্তী এটি রক্ষীবাহিনী হয়)
৫. ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বিষয় - চলমান যুদ্ধে নেতৃত্ব দিবেন ভারতীয় সেনাপ্রধান এবং যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর অধীনে থাকবেন।
৬. বানিজ্য বিষয়- ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে খোলাবাজার ভিত্তিতে বানিজ্য চলবে।
৭. পররাষ্ট্র বিষয়- বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশ্নে আগে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে নিতে হবে।
তথ্যসূত্র: দুশো ছেষট্টি দিনে স্বাধীনতা (পৃষ্ঠা - ৩২৫)
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ছিলো পাকিস্তানের থেকে স্বাধীনতার যুদ্ধ। কিন্তু তাজউদ্দীন আহমদের এই ৭দফা চুক্তিটি ছিলো ভারতের কাছে দেশ বিক্রি এবং করদ রাজ্যে পরিণত করার চুক্তি।
এআরএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: