জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ প্রস্তুত সম্ভব: আলী রীয়াজ

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
সোমবার রাজধানীর সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্য অগ্রগতি বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মত বিনিময় সভায় অধ্যাপক আলী রীয়াজ কমিশনের কার্যক্রম সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়, সংস্কার প্রস্তাব বিষয়ক ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদনসমূহ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে গত ৫ মার্চ কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে নির্বাচিত ১৬৬টি সুপারিশ দলগুলোর মতামতের জন্য প্রেরণ করা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত সুপারিশগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচন ব্যবস্থা ২৭টি, বিচার বিভাগ ২৩টি, জনপ্রশাসন ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য বিবেচনায় স্প্রেডশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
কমিশন জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের পাশাপাশি কমিশন গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রথম দফায় ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে মোট ৪৫টি বৈঠক করেছে। এসব আলোচনায় একাধিক বিষয়ে যেমন ঐকমত্য গঠিত হয়েছে, তেমনি কিছু বিষয়ে মতবিরোধ থেকে গেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণ, এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, কমিশন দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করতে চায়। এই আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। তিনি বলেন, ‘‘সব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব না হলেও, যেসব মৌলিক বিষয়ে এখনো মতভিন্নতা রয়েছে সেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা হবে।’’
উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ আগস্ট।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এআরএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: