গুলশানে শিগগিরই হচ্ছে প্রবাসী হাসপাতাল: প্রবাসীকল্যাণ উপদেষ্টা
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ঢাকার গুলশানে শিগগিরই প্রবাসী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিদেশ ফেরৎ প্রবাসীদের দ্বারা পরিচালিত হবে এ হাসপাতাল। শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে হাসপাতালের মালিকানাও লাভ করবেন প্রবাসীরা।
বুধবার ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ ভবনের প্রবাসী মিলনায়তনে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড আয়োজিত প্রবাসীদের মেধাবী সন্তানকে শিক্ষাবৃত্তি, প্রতিবন্ধী ভাতা, অসুস্থ প্রবাসীদের চিকিৎসা সহায়তা এবং প্রবাসে মৃতের পরিবারকে আর্থিক অনুদান এবং বীমা ও মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রবাসীদের কল্যাণে বর্তমান সরকার গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে বলেন উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণ, অধিকার এবং মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিয়ে নিরলসভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যেসকল প্রবাসী ভাইয়েরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তাদেরকে কারামুক্ত করতে প্রধান উপদেষ্টার একান্ত প্রচেষ্টা আপনারা দেখেছেন। শুধু তাই নয় দেশে আসার পর তাদের জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানও প্রদান করা হয়েছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া’র সভাপতিত্বে এসময় তিনি আরও বলেন, বছরের পর বছর প্রবাসগামী ও প্রবাসফেরত কর্মীদেরকে বিমানবন্দরে বিনা কারণে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। ইতোমধ্যে বিমানবন্দরে গৃহীত নানা পদক্ষেপের কারণে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ হয়েছে।
এছাড়াও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মীরা প্রবাসীদের সাথে যেন ভাল আচরণ করে, সে বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকাস্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ‘প্রবাসী লাউঞ্জ’ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে শতকরা ৩০ ভাগ পর্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন খাবার, ফ্রি ওয়াই-ফাই, ফ্রি টেলিফোন, মোবাইল চার্জিংসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে। প্রবাসগামী ও প্রবাসফেরত কর্মীদের ভোগান্তি এড়াতে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে স্থাপিত প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে তাদেরকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১৫-২০ জন প্রবাসীকর্মীর মৃতদেহ দেশে ফেরত আসে। এই মৃতদেহ পরিবহনের জন্য ইতোপূর্বে বোর্ডের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারে প্রবাসীদের ভাড়া দিতে হতো। বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া সম্পূর্ণ ফ্রি করা হয়েছে এবং আরো দুটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়ের বিষয়ে প্রক্রিয়াধীন। কল্যাণ বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত সেবাসমূহ সহজিকরণ এবং নতুন নতুন কি কি সেবা চালু করা যায় সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রবাসীদের কল্যাণ নিশ্চিতকরণে ইতোমধ্যে আইন ও বিধি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড পরিচালিত প্রবাসবন্ধু কল সেন্টার-কে শক্তিশালী ও কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া, সেবা প্রার্থীদের সুবিধার্থে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে প্রবাসী সাপোর্ট সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সেবা প্রার্থীগণকে সকল প্রকার সেবামূলক পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
এদিকে, ১২টি পরিবারের মধ্যে ৩৬ লাখ টাকার আর্থিক অনুদান, প্রবাসী পরিবারের ৬৫ জনের মধ্যে ২১ লক্ষ টাকার শিক্ষাবৃত্তি, ১১ জনের মধ্যে বীমা দাবির এক কোটি ৪ লক্ষ টাকা, ২টি পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বা বকেয়া বা সার্ভিস বেনিফিটের অর্থ বাবদ,২৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, ৩ জনের মধ্যে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে ৩ লক্ষ ৩০ হাজার এবং দশ জনের মধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতা হিসেবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকাসহ মোট এক কোটি ৯৩ লাখ ১৩ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: